এ বার পুজোয় মসলিনের সুর

এর আগে বাঙালি গামছা নিয়ে গান বেঁধেছে, পাছাপেড়ে শাড়ি নিয়ে গান বেঁধেছে। উসখুশ দিনে ছটফট পরানটাকে বাঁধতে চেয়েছে গামছা দিয়ে, সুন্দরীর কোমরে দোলার কামনায় অস্থির গান বলেছে— ‘এ বার ম’লে সুতো হব, তাঁতির ঘরে জন্ম নেব...।’

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২০
Share:

মসলিন নিয়ে নতুন অ্যালবামের শুটিং-এ সুরিজৎ। —নিজস্ব চিত্র।

এর আগে বাঙালি গামছা নিয়ে গান বেঁধেছে, পাছাপেড়ে শাড়ি নিয়ে গান বেঁধেছে।

Advertisement

উসখুশ দিনে ছটফট পরানটাকে বাঁধতে চেয়েছে গামছা দিয়ে, সুন্দরীর কোমরে দোলার কামনায় অস্থির গান বলেছে— ‘এ বার ম’লে সুতো হব, তাঁতির ঘরে জন্ম নেব...।’

কিন্তু তাঁতির ঘরের ইন্দ্রজাল যে মসলিন, তাকে সুরে বাঁধেনি কেউ। মাকড়সার জালের মতো প্রায় অদৃশ্য সুতোয় বোনা, বাদশা থেকে বড়লাট — মসলিনের জাদুতে মজেছেন প্রায় সবাই। তাকে নিয়ে গল্পগাথারও শেষ নেই। কিন্তু গান হয়নি।

Advertisement

এ বার হচ্ছে।

শুধু কি গান? গোটা মিউজিক ভিডিও। তাতে গলা মিলিয়েছেন ঊষা উত্থুপ, শ্রীকান্ত আচার্য, লোপামুদ্রা, রূপঙ্কর, সোমলতা, সুরজিৎ। বাংলার মসলিনের ইতিহাস নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনো করে গানের সুর ও কথা সাজিয়েছেন সুরজিৎই। রেকর্ডিং হয়ে গিয়েছে। এখন চলছে মিউজিক ভিডিও-র শুটিং।

সোমবার সেই কাজেই নদিয়ার নবদ্বীপে মাটিয়ারি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানের মসলিন বোনার কেন্দ্রে সারা দিন শুটিং করলেন ভিডিওটির পরিচালক কমলিনী চট্টোপাধায় এবং সুরজিৎ। কমলিনীর মতে, খাদির সুদীর্ঘ কালের ইতিহাসে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। সুরজিতের ইচ্ছে, এই গানটি হবে মসলিনের ‘থিম সং’।

গোটা পরিকল্পনার পিছনে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদ। কিন্তু কেন এই উদ্যোগ? রাজ্য খাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌরীশঙ্কর দত্তের বক্তব্য, ‘‘বিশ্বজয়ের যাবতীয় উপাদান যাতে মজুত, সেই বাংলার মসলিনকে আন্তর্জাতিক বাজারে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্যই এই পরিকল্পনা।’’ এই পরিকল্পনাটি যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তা-ও তিনি জানিয়ে দিতে ভোলেননি।

সঙ্গীত নিয়ে নানা ধরনের কাজে যুক্ত সুরজিৎ নিজেও এই কাজ নিয়ে খুব উত্তেজিত। তাঁর কথায়, ‘‘নানা প্রজন্মের শিল্পীদের নিয়ে কথায়-সুরে বাংলার শতাব্দী-প্রাচীন মসলিনকে ছুঁতে চাওয়া হয়েছে এই গানে। মসলিন তো শুধু কাপড় নয়, বাংলার কয়েক শতাব্দীর ইতিহাস। তাকে ধরতে পারা কঠিন কাজ।’’

দু’দিন ধরে নদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শুটিং হবে। পুজোর মধ্যেই অ্যালবামটি বাজারে চলে আসবে বলে দলের সকলের আশা।

সব মিলিয়ে মসলিনের বারান্দায় এখন রোদ্দুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন