তিনি নিজে বি-টেকের ছাত্র। যদিও মাস তিনেক হল পড়ার পাট চুকিয়েছেন। বোন কম্পিউটার সায়েন্স অনার্সের পড়ুয়া। মা গৃহশিক্ষকতা করেন। সেই ছেলে মঞ্চে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মেরেছে, রবিবার রাত অবধিও সে কথা হজম করতে পারছেন না পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
দেবাশিস আচার্য নামে ওই যুবক তমলুক শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডের মালিজঙ্গলপাড়ার বাসিন্দা। চড় মারার পরে তৃণমূলের রোষের শিকার হয়ে তিনি এখন তমলুক জেলা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে যুঝছেন। কেন তিনি, এমন কাণ্ড ঘটালেন, তা তাঁর পরিবারের কাছে স্পষ্ট নয়। দেবাশিসের বাবা দেশবন্ধু আচার্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের ব্যবসায়ী। তাঁদের আদি বাড়ি তমলুকের বল্লুক গ্রামে। বছর দু’য়েক মালিজঙ্গলপাড়ায় ভাড়া এসেছেন। দেশবন্ধুবাবুর কথায়, “পড়াশোনায় ছেলে খুবই ভাল। ও এমন ঘটনা ঘটাবে বুঝিনি।” রাতে হাসপাতালেই ছিলেন দেবাশিসের বাবা-মা। বোন অবশ্য বাইরে থেকে পড়াশোনা করে।
দেশবন্ধুবাবু জানান, দুর্গাপুরের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি-টেক করছিলেন তাঁর ছেলে। তবে দেবাশিস কেন হঠাৎ মাস তিনেক আগে পড়া বন্ধ করেন, তা জানা নেই আচার্য পরিবারের। দেশবন্ধুবাবু বলেন, “পড়া ছাড়ার পরে ছেলে এক বারই বাড়িতে এসেছিল। আজ যে ও চণ্ডীপুরের সভায় যাবে, আমাদের জানা ছিল না। টিভি দেখে সব জানতে পারি।” ওই পরিবারের প্রতিবেশী সৌমিত্র মোহান্তি জানান, টিভিতে ঘটনা দেখে দেশবন্ধুবাবু তাঁদের বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, এ আমারই ছেলে’।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দুর্গাপুরে পড়ার পাট চুকিয়ে দেবাশিস হরিদ্বার গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি নিছক বেড়াতেই গিয়েছিলেন কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কথা বলা যায়নি দেবাশিসের সঙ্গে। তবে যে মোবাইল নিয়ে ছবি তোলার অছিলায় মঞ্চে উঠে তিনি অভিষেককে চড়া মেরেছিলেন, সেটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
ওই যুবকের চিকিৎসা করেছেন জেলা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ওর মাথায় তিন জায়গায় গভীর ক্ষত রয়েছে। বুকেও আঘাত লেগেছে। শরীরের অন্য অংশেও চোট রয়েছে।”