ক্ষমতায় আসা অসম্ভব নয় বিজেপির: অধীর

রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি-র দ্রুত উত্থান নিয়ে দলে ক্রমাগত সতর্ক-বার্তা জারি করছেন শাসক তৃণমূল ও বিরোধী বাম নেতারা। বিপদ-ঘণ্টা বাজানোয় এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী! আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করাও বিজেপি-র পক্ষে অসম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৯
Share:

রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি-র দ্রুত উত্থান নিয়ে দলে ক্রমাগত সতর্ক-বার্তা জারি করছেন শাসক তৃণমূল ও বিরোধী বাম নেতারা। বিপদ-ঘণ্টা বাজানোয় এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী! আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করাও বিজেপি-র পক্ষে অসম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

Advertisement

মালদহের চাঁচলে রবিবার একটি সভায় অধীর বলেছেন, “২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সরানোর ক্ষমতা নেই কংগ্রেসের। কেননা কংগ্রেস এখনও তৃণমূলের বিকল্প হয়ে উঠতে পারেনি। তবে রাজ্যে যে রাজনৈতিক বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাতে বিজেপি তৃণমূলের বিকল্প হতেই পারে। এমনকী, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র পক্ষে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করাও অসম্ভব নয়!” একক ভাবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষে লড়াই করে বিশেষ কিছু করা সম্ভব নয় বুঝেই এখন নানা অঙ্ক চলছে দলীয় শিবিরে। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর ডাকে সাড়া দিয়ে জওহরলাল নেহরুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সম্মেলনে যোগ দিতে এ দিনই দিল্লি গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য কংগ্রেসের একাংশ চাইছেন, আবার তৃণমূলের হাত ধরেই কিছু আসন জয় নিশ্চিত করতে। দলেরই অন্য একাংশ আবার বামেদের সঙ্গে জোট চেয়ে দিল্লিতে দরবার করছে। এই অবস্থায় অধীরের এ দিনের স্বীকারোক্তি তাৎপর্যপূর্ণ।

চাঁচলের ওই সভায় উপস্থিত উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর অবশ্য পরে বলেন, জেলায় জেলায় দলের সাংগঠনিক ঘাটতির কথাই মেনে নিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। আন্দোলনের পথে গিয়ে অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশিই, বিজেপি ক্ষমতায় এলে যে বিপদ হবে, সেই কথাও বলেছেন। মালদহে দু’টি লোকসভা আসনই এখন কংগ্রেসের দখলে, জেলাটিও সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত। সেখানে গিয়ে প্রদেশ সভাপতির এমন মন্তব্য নিয়ে অধীর-ঘনিষ্ঠ এক নেতারও ব্যাখ্যা, “তৃণমূলকে হঠিয়ে বিজেপি এলে সংখ্যালঘু মানুষ যে আরও বিপদে পড়বেন, সেই কথাই বলতে চেয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। কংগ্রেসকে বিকল্প করে তোলার জন্যই বলেছেন।” যেখানে গিয়ে অধীরের এ দিনের মন্তব্য, সেখানে চাঁচল-২ ও রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ কংগ্রেস সদস্য সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। দলত্যাগীদের ‘মীরজাফর’ আখ্যা দিয়েছেন মৌসম। অধীরের সভায় অবশ্য ভিড় হয়েছিল ভালই।

Advertisement

ওই সভাতেই অধীর আরও বলেছেন, “আগামী বিধানসভায় কংগ্রেস তৃণমূলের বিকল্প হয়ে না উঠলেও রাজ্য জুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিবাদী মানুষদের এক সময় ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিল তৃণমূল। আর তার জেরেই রাজ্যে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা। কিন্তু অল্প দিনেই রাজ্যবাসীর মোহ ভেঙে গিয়েছে।”

কলকাতার উপকণ্ঠে বেহালায় সভা করে এ দিনই আবার দুর্নীতির প্রশ্নে বিজেপি-কে পাল্টা আক্রমণে গিয়েছেন তৃণমূলের ‘যুবরাজ’। সারদা-কাণ্ডে ফেঁসে থাকা শাসক দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গত তিন মাসে কেন্দ্রীয় চার মন্ত্রীর সম্পত্তি ফুলেফেঁপে ওঠা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, “নরেন্দ্র মোদীর কাছে জানতে চাই, এখানে ক’টা সিবিআই তদন্ত হচ্ছে? এর জবাব দিতে হবে!” বস্তুত, তৃণমূলের ঘাড়ে বিজেপি-র নিঃশ্বাস টের পেয়েই জনসংযোগ বাড়াতে দলের স্থানীয় নেতাদের প্রত্যেক বুথে ন্যূনতম ৫০ জন করে কর্মী তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন যুবরাজ। সেই কর্মীদের সপ্তাহে অন্তত এক বার পাঁচটা করে বাড়িতে গিয়ে সুখ-দুঃখের খোঁজ নিতে হবে। অভিষেকের কথায়, “এই ভাবে প্রতি বুথে ৫০ জন কর্মী পৌঁছবেন ২৫০টি বাড়িতে। তার মানে ১০০০ লোকের সঙ্গে সম্পর্ক হবে।” একই মঞ্চ থেকে বিজেপি-কে নিশানা করেছেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীও। একই দিনে কলকাতায় বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভায় রাজ্য জুড়ে নির্যাতিত মহিলাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর জন্য সংগঠনকে পরামর্শ দিয়েছেন দলের একমাত্র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement