গ্যাসের উৎস ছাত্রীর ঘরের চৌকাঠ

বদ্ধ ঘরে শ্বাস আটকে সুমন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ঘটনায় উৎকট ঝাঁঝালো গন্ধের অস্তিত্ব পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। আর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, প্রেসিডেন্সির ওই ছাত্রী পেয়িং গেস্ট হিসেবে আরপুলি লেনের যে-বাড়িতে থাকতেন, সেখানে তাঁর ঘরের চৌকাঠ ও জানলার পাশ থেকেই ওই ঝাঁঝালো গ্যাস নির্গত হচ্ছে। তবে অত্যধিক পরিমাণে ওই গ্যাস ফুসফুসে ঢোকার ফলেই সুমন্তিকার মৃত্যু হয়েছে কি না, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

গ্যাসের উৎস সন্ধানে আরপুলি লেনের বাড়িতে বিশেষজ্ঞরা। - নিজস্ব চিত্র

বদ্ধ ঘরে শ্বাস আটকে সুমন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ঘটনায় উৎকট ঝাঁঝালো গন্ধের অস্তিত্ব পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। আর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, প্রেসিডেন্সির ওই ছাত্রী পেয়িং গেস্ট হিসেবে আরপুলি লেনের যে-বাড়িতে থাকতেন, সেখানে তাঁর ঘরের চৌকাঠ ও জানলার পাশ থেকেই ওই ঝাঁঝালো গ্যাস নির্গত হচ্ছে। তবে অত্যধিক পরিমাণে ওই গ্যাস ফুসফুসে ঢোকার ফলেই সুমন্তিকার মৃত্যু হয়েছে কি না, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা।

Advertisement

ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের চার সদস্যের একটি দল এ দিনও আরপুলি লেনের ওই বাড়ি পরিদর্শনে যায়। যে-ঘরে সুমন্তিকা থাকতেন, সেটি ছাড়াও আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘুরে দেখে তারা। ‘কমবাসটিবেল গ্যাস ইন্ডিকেটর’ বা দাহ্য গ্যাস পরিমাপের যন্ত্র দিয়ে ঘটনাস্থলে এবং সংলগ্ন এলাকার বাতাসে গ্যাসের উপস্থিতি এবং তার ঘনত্ব মাপা হয়। দেখা যায়, সুমন্তিকার ঘরে বিছানার পাশেই একটি জানলা আছে এবং সেই ঘরেরই দরজার চৌকাঠের কাছ থেকে ওই গ্যাস নির্গত হচ্ছে। তবে গ্যাসের ঘনত্ব সব থেকে বেশি সুমন্তিকার বিছানার লাগোয়া জানলার কাছেই।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএসসি (পদার্থবিজ্ঞান) প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুমন্তিকা রবিবার দম বন্ধ হয়েই মারা গিয়েছেন বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট জানায়, সুমন্তিকার দেহে অত্যন্ত বেশি পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড পাওয়া গিয়েছিল। ওই ঘরে একটি গ্যাসের গন্ধও পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সোমবার রাজ্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞেরা তিন ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করেও ওই গ্যাসের উৎসের হদিস পাননি। মঙ্গলবার অবশ্য ঘণ্টাখানেক খোঁজাখুঁজির পরেই ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির রসায়ন বিশেষজ্ঞেরা সেই উৎসের সন্ধান পান। ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির রসায়ন বিশেষজ্ঞ দেবাশিস রায় বলেন, “সুমন্তিকার ঘরের জানলায় বেশ কয়েকটি ফুটো রয়েছে। এবং সেখানকার বাতাসেই ওই গ্যাসের ঘনত্ব সব থেকে বেশি।”

Advertisement

পুলিশি সূত্রের খবর, ওই এলাকায় মাটির তলায় গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের পাইপলাইন আছে। সুমন্তিকা যে-ঘরে থাকতেন, তার দরজার চৌকাঠের দেড় ফুট নীচে দিয়ে গিয়েছে ওই পাইপ। এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ মুচিপাড়া থানার তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা এবং গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে যান। সুমন্তিকার ঘর তো বটেই, আশেপাশের বেশ কয়েকটি ঘর পরীক্ষা করেন তাঁরা। গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “সুমন্তিকার ঘরের ভিতর থেকে বাতাসের নমুনা এবং গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের দাহ্য গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই দু’টি একই গ্যাস কি না, তা পরীক্ষা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন