পড়শি রাজ্য ছত্তীসগঢ়ে একের পর এক মাওবাদী হানার ঘটনা ঘটছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করার আর্জি জানালেন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকেরা।
লোকসভার ভোটে কতটা কড়া নিরাপত্তা চাইছে জেলা প্রশাসন?
এই ব্যাপারে বিগত জোড়া ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৃষ্টান্ত টানছেন জঙ্গলমহলের তিন জেলাশাসক। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তের সঙ্গে ভিডিও-সম্মেলনে ওই তিন জেলাশাসক জানান, আগের দু’টি নির্বাচনে রাজ্যের মাওবাদী প্রভাবিত সব এলাকাকে যে-ভাবে নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল, এ বার যেন তেমনই ব্যবস্থা থাকে। কমিশনের তরফেও নিরাপত্তার ব্যাপারে কিছু কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জেলার ভারপ্রাপ্তদের। যেমন রাজ্যের যুগ্ম মুখ্য নির্বাচনী অফিসার অমিত রায়চৌধুরী এ দিন বলেন, “ভোট চলাকালীন জঙ্গলমহলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যাতে কোনও রকম ফাঁক থেকে না-যায়, তার জন্য নির্বাচনের দু’দিন আগে থেকেই মোবাইলের পাশাপাশি স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে ডিএমদের।”
আগের দু’টি ভোটে জঙ্গলমহলে কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল?
২০০৯ সালে জঙ্গলমহল এলাকায় বেশ কয়েকটি বুথকে একত্র করে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে ভোট দেওয়ার সময়ও দু’ঘণ্টা কমিয়ে বেলা ৩টেয় ওই কাজে দাঁড়ি টেনে দেওয়া হয়। কপ্টার থেকে নজরদারি ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। তার পরে, ২০১১-য় বিধানসভা ভোটে পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করা হলেও বুথ একত্র করে ভোট নেওয়ার বন্দোবস্ত হয়নি। তবে আকাশ থেকে নজরদারি ছিল। ডিএমরা এ বারেও সেই ধরনের নিরাপত্তা ব্যূহ চান। রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন তাঁরা। কমিশন ঠিক করেছে, নির্বাচনের দিন ভোটকর্মীদের খাওয়াদাওয়ার যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সেই জন্য এ বার গোটা রাজ্যে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগানো হবে। তারাই খাবার সরবরাহ করবে। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে পাউচে জল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কমিশনের সিদ্ধান্ত, এ বার আর ভোটকর্মীদের হাতে নগদ টাকা দেওয়া হবে না। ওই টাকা সংশ্লিষ্ট কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে।