জনসভায় নতুন রাস্তার কথা বললেন মমতা

নির্বাচন ঘোষণার পরে নতুন কোনও প্রকল্পের ঘোষণা না করাই বিধি। কিন্তু মঙ্গলবার আরামবাগের নির্বাচনী সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকায় একটি নতুন রাস্তা তৈরির কথা উল্লেখ করলেন। এর আগে যা ঘোষিত হয়নি। তাঁর এই বক্তৃতার কথা জানে প্রশাসনও। তবে এটিকে মুখ্যমন্ত্রীর “ভাবনাচিন্তা” বলে মনে করছেন নির্বাচনী আধিরকারিকরা। নতুন প্রকল্পের ঘোষণা বা প্রতিশ্রুতি বলে ধরছেন না। তাই একে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ বলে ধরা হচ্ছে না, জানালেন এক নির্বাচনী আধিকারিক। জেলা সিপিএম অবশ্য বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানানোর জন্য তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৮
Share:

নির্বাচন ঘোষণার পরে নতুন কোনও প্রকল্পের ঘোষণা না করাই বিধি। কিন্তু মঙ্গলবার আরামবাগের নির্বাচনী সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকায় একটি নতুন রাস্তা তৈরির কথা উল্লেখ করলেন। এর আগে যা ঘোষিত হয়নি। তাঁর এই বক্তৃতার কথা জানে প্রশাসনও। তবে এটিকে মুখ্যমন্ত্রীর “ভাবনাচিন্তা” বলে মনে করছেন নির্বাচনী আধিরকারিকরা। নতুন প্রকল্পের ঘোষণা বা প্রতিশ্রুতি বলে ধরছেন না। তাই একে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ বলে ধরা হচ্ছে না, জানালেন এক নির্বাচনী আধিকারিক। জেলা সিপিএম অবশ্য বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানানোর জন্য তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? মঙ্গলবার আরামবাগের জনসভায় তিনি বলেন, “আমরা একটা বড় কাজ করছি। সেটা রাস্তা। সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। ২০১৫ সাল থেকে যেটা শুরু হবে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া ছুঁয়ে মুর্শিদাবাদে শেষ হবে। এটা হবে রাজ্য সড়ক। এক সঙ্গে ছয় থেকে আটটি জেলাকে জুড়বে। সেই রাস্তার পাশে দোকানঘর, মার্কেট হবে। মল হবে। কত ছেলে চাকরি পাবে।” প্রকল্পটি হতে সময় লাগবে, তা মনে করিয়ে তিনি বলেন, “বলবেন না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে গেল, কিন্তু হল না। তাড়াহুড়ো করবেন না, এটা সময় লাগবে।”

পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের মোরগ্রাম থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের মেছোগ্রাম পর্যন্ত একটি চার লেনের রাস্তা তৈরি হবে। যার খরচ হবে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পটির বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। রাস্তাটি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সমান্তরাল হিসেবে নির্মাণ করা হবে, যাতে উত্তরপূর্ব ভারত থেকে পণ্যবাহী যান কলকাতায় প্রবেশ না করে দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারতে চলে যেতে পারে। পাশাপাশি হলদিয়া বন্দর থেকে নেপাল-ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে কলকাতাকে এড়িয়ে।

Advertisement

পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনাও হয়েছে। তবে ঋণ এখনও মঞ্জুর না হওয়ায়, প্রকল্পটি চূড়ান্ত হয়নি। তাই এই রাস্তাটি নিয়ে সরকারি ভাবে এখনও কোনও ঘোষণা করা হয়নি। আজ মুখ্যমন্ত্রী জনসভায় এ ভাবে রাস্তাটির বিষয়ে জানানোয় বিস্মিত পূর্ত দফতরের কর্তারাও।

হুগলি জেলা সিপিএম সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী অবশ্য জানান, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ বলেই ধরছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের বিধি ভাঙতেই তো মুখ্যমন্ত্রী অভ্যস্ত। নির্বাচনী জনসভায় কোনও বক্তৃতার ছ’ঘন্টার মধ্যে ভিডিও খতিয়ে দেখে নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। কমিশনের উপর আমাদের আস্থা আছে। যদি তাঁরা নিজে থেকে কিছু না করেন, তা হলে আমরাই ভিডিও রেকর্ড-সহ অভিযোগ জানাব।”

জেলার তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নাও মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের সভায় ছিলেন। তিনি বলেন, “প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে যদি পরিকল্পনা তৈরি হয়ে গিয়ে থাকে, তবে তা বলার মধ্যে দোষের কী আছে? এটা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের মধ্যে পড়ছে না। সিপিএম এ বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে নিজেদের জালে নিজেরাই জড়াবে।”

রাজ্যস্তরের এক নির্বাচনী আধিকারিক বলেন, “বিষয়টি নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছে, তখন ভিডিও রেকর্ড এনে খতিয়ে দেখা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement