টুকেই গবেষণা, শিক্ষকের পরে অভিযুক্ত ছাত্রও

সাত নকলে গবেষণা! ছাত্র-গবেষকের গবেষণাপত্র হুবহু নকল করে বই লিখে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছিল গাইড বা নির্দেশকের বিরুদ্ধে। এ বার অভিযোগ উঠল, ছাত্রের সেই গবেষণাপত্রটিও মোটেই মৌলিক নয়! সেটির একটা বড় অংশের সঙ্গে মিল পাওয়া গিয়েছে বছর দুয়েক আগে প্রকাশিত অন্য এক জনের গবেষণাপত্রের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:০০
Share:

সাত নকলে গবেষণা!

Advertisement

ছাত্র-গবেষকের গবেষণাপত্র হুবহু নকল করে বই লিখে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছিল গাইড বা নির্দেশকের বিরুদ্ধে। এ বার অভিযোগ উঠল, ছাত্রের সেই গবেষণাপত্রটিও মোটেই মৌলিক নয়! সেটির একটা বড় অংশের সঙ্গে মিল পাওয়া গিয়েছে বছর দুয়েক আগে প্রকাশিত অন্য এক জনের গবেষণাপত্রের।

এই অভিযোগ জানিয়ে চিঠি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়েছেন কয়েক জন শিক্ষক। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে তিনি তা খতিয়ে দেখবেন।

Advertisement

যাঁর গবেষণাপত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি আসানসোল গার্লস কলেজের শিক্ষক বিবেকানন্দ সাহু। তিনি বলেন, “গবেষণাপত্রে ‘রেফারেন্স’-এর উল্লেখ আছে। এর বেশি আর কিছু বলার নেই।” বিবেকানন্দরবাবুর গাইড প্রণাম ধর বারাসতের পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের প্রধান। তিনি আবার শাসক দল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার সহকারী সম্পাদকদের অন্যতম।

২০১৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগ থেকে ‘দ্য চেঞ্জিং প্রোফাইল অব কমার্শিয়াল ব্যাঙ্কিং ইন ইন্ডিয়া’ নামে গবেষণাপত্রের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হয় বিবেকানন্দবাবুকে। সেই গবেষণার কাজে প্রণামবাবু এক জন গাইড ছিলেন। বিবেকানন্দবাবুর গবেষণাপত্রের ভূমিকা, বিষয়বস্তু, উদ্দেশ্য, পদ্ধতি, মডেল, অধ্যায়, উপ-অধ্যায় নকল করে প্রণামবাবু এ বছর গবেষণাপত্রটির নামেই একটি বই প্রকাশ করেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ জানিয়ে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বার অভিযোগ উঠেছে বিবেকানন্দবাবুর গবেষণাপত্রটির মৌলিকতা নিয়েই।

অভিযোগটি কী?

অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ২০১২ সালে ভারতের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। সেই পত্রটির উপসংহার ও সুপারিশের সঙ্গে বিবেকানন্দবাবুর গবেষণাপত্রের ওই অংশগুলির হুবহু মিল পাওয়া গিয়েছে। প্রণামবাবুর বইয়ের সঙ্গেও ২০১২-র ওই গবেষণাপত্রের মিল আছে বলে অভিযোগ। প্রণামবাবুর বক্তব্য, এমন অভিযোগের কথা তাঁর জানা নেই।

নকল করে বই লেখা, অন্যের গবেষণাপত্র থেকে টোকা ইত্যাদি অভিযোগের প্রতিলিপি জমা পড়েছে প্রণামবাবুর কর্মস্থল রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে প্রণামবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়েবকুপা। সংগঠনের সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু বলেন, “সংবাদমাধ্যমে কী বেরোল, তা নিয়ে নাচানাচি করার কারণ নেই। অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন