মদ-গাঁজা খাওয়ার অভিযোগ তুলে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাদবপুরের ছাত্র আন্দোলনকে আক্রমণ করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বামফ্রন্টের মহামিছিল থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই নেশা করার পাল্টা অভিযোগ উঠল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, শ্যামল চক্রবর্তীরা নাম না করে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে নেশা করার অভিযোগ তুললেন।
যাদবপুরের আন্দোলনকে ছোট করতেই তৃণমূল নেশার প্রসঙ্গ তুলছে, এই অভিযোগ করে সূর্যবাবু বলেন, “যাঁরা নেশার কথা বলছেন, তাঁরা নিজেরা নেশা করেন বলেই অন্যদের সম্পর্কে এ কথা বলছেন। আমি এক মন্ত্রীকে জানি, যিনি এমন নেশা করেন যে, সন্ধ্যার পরে কথাই বলতে পারেন না। ফলে ট্যাক্সি ধর্মঘট-সহ পরিবহণ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘মদ গাঁজা চরস বন্ধ। তাই কি প্রতিবাদের গন্ধ?’ অভিষেকের নাম না করে বিমানবাবু বলেন, “যদি কোনও নেশাড়ু বলে, সে দিনের মিছিল নেশাড়ুরা করেছে, আমি বলব, তারাই নেশাগ্রস্ত।” বিমানবাবুরও অভিযোগ, “তৃণমূলের এক নেতা এমন নেশা করেন যে, রাতে তাঁর সঙ্গে কথাই বলা যায় না!” যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনকে সমর্থন করে বিমানবাবু বলেন, “ওরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছে। আমরা ওদের আন্দোলনকে সমর্থন করি। ছাত্রদের দাবি মেনে উপাচার্যকে অপসারণ করতেই হবে।” যাদবপুরে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগের তদন্তের জন্য যে কমিটি গড়েছে সরকার, তাকেও বামফ্রন্ট মানছে না বলে বিমানবাবু জানান। সিপিএম-সহ বাম নেতাদের মত, অভিষেক যে ভাবে যাদবপুরের ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে নেশাগ্রস্তদের আন্দোলন বলে কটাক্ষ করেছেন, তাতে পাল্টা আক্রমণের পথ নিলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। এ কথা মাথায় রেখেই অভিষেকের বক্তব্যের পিছনে শ্যামলবাবু খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ‘পরিকল্পনা’ দেখতে পাচ্ছেন। সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামলবাবুর কথায়, “অভিষেক কোনও দিন ছাত্র রাজনীতি করেননি। ছাত্র আন্দোলন নিয়ে এটা ওঁর কথা নয়। ওঁর পিসিমার কথা। পিসিমার কথাই অভিষেক বলেছেন।”
সোমবার মৌলালির রামলীলা উদ্যান থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত বামফ্রন্টের মিছিলে যাদবপুরের ছাত্রদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ হয়। আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্য, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানি প্রতেকেই নেশার প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন।