দলবিরোধী কাজের অভিযোগে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীরকে শো-কজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার, দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে ‘অপমানজনক’ মন্তব্য করার অভিযোগেই তাঁর বিরুদ্ধে কড়া হয়েছে দল।
একদা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হুমায়ুন দলবদল করেছিলেন মুকুল রায়ের হাত ধরে। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে রাজ্য মন্ত্রিসভায় প্রাণিসম্পদ দফতরের দায়িত্ব পেলেও রেজিনগর উপনির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। এর পরেই দলীয় নেতৃত্ব সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করায় ক্রমেই দলনেত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করেছিল হুমায়ুনের। সেই সঙ্গে, দিন কয়েক আগেও তিনি কোনও রাখঢাক না রেখেই জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি মুকুলদার পাশেই রয়েছি।’’ দলের অন্দরের খবর, শো কজ করে এ দিনই তারই ‘শাস্তি’ দেওয়া হল তাঁকে।
হুমায়ুন অবশ্য এ দিনও বলেন, “মুকুলদার হাত ধরেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলাম। এখনও ওঁর পাশে রয়েছি। তবে শো কজের ব্যাপারে হাতে চিঠি না পেলে কোনও মন্তব্য করব না।”
লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্রে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় তাঁকেই বাজি ধরেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। তবে শেষ মুহূর্তে উল্টে গিয়েছিল হিসেব। প্রার্থী করা হয়েছিল ইন্দ্রনীল সেনকে। দলের এক শীর্ষনেতা বলেন, “প্রার্থী হতে না পেরে এর পর থেকে হুমায়ুন ইন্দ্রনীল এবং দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা শুরু করেন। এমনকী ‘দিদি কলকাতা থেকে একটা ভেড়াকে পাঠিয়েছেন’, বলেও ইন্দ্রনীলকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি।” প্রকাশ্যে দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনাও করেছেন বহু বার। তবে তারপরেও না-দেখার ভান করে থেকেছেন দলীয় নেতৃত্ব। তা হলে এত দিন পরে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হল কেন দল, তা কি নিছকই তাঁর মুকুল-ঘনিষ্ঠতার জন্য? এ দিন পার্থবাবু বলেন, “ইন্দ্রনীলের নামে কুৎসা করা ছাড়াও, দলনেত্রীর নির্দেশ অমান্য করে বিভিন্ন সময়ে হুমায়ুন জেলায় দলবিরোধী কাজ করেছে।” থানা ঘেরাও করে পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিকবার বিক্ষোভ কর্মসূচিও করেছেন তিনি। পুলিশ দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তা যে ভাল চোখে দেখা হয়নি বলাই বাহুল্য। তবে, হুমায়ুনকে শো-কজের উত্তর কবে দিতে হবে, এ দিন পার্থবাবু সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।