দু’দিন আগে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ মুকুল রায় দেখা করলেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে।
তৃণমূলে একঘরে হয়ে পড়া মুকুল রায় দলের হুইপ মেনে নিয়মিত হাজির থাকছেন রাজ্যসভায়। বসছেন তাঁর জন্য নতুন বরাদ্দ হওয়া লাস্ট বেঞ্চে। তবে সংসদে নীরব থাকলেও সপার্ষদ মুকুল সক্রিয় রয়েছেন রাজধানীর রাজনৈতিক অলিন্দে। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই আজ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন মুকুলবাবু। কী কারণে? এই প্রশ্ন করা হলে মুকুল শুধু জানিয়েছেন, “নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ। অনেক দিন দেখা হয়নি। তাই সময় চেয়েছিলাম।” তাঁর বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি একটি সাংবিধানিক পদ। তাই প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করার সঙ্গে রাজনীতিকে মেলানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
দলের মধ্যে চরম অপমানিত হওয়া সত্ত্বেও মুকুল যে ভাবে এখনও দিল্লিতে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন, তাতে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে। মুকুলের এই টানা রাজধানীবাসের আসল কারণটি কী, তা জানার জন্য বিভিন্ন ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তৃণমূলের নেতারা। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মুকুল রায়। তৃণমূলের আশঙ্কা, প্রায় পঁচিশ মিনিটের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক রাজনৈতিক ছবিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা করে এসেছেন মুকুলবাবু। দলের নেতাদের মতে, যে ক’জন তৃণমূল দলটিকে ভাল রকম চেনেন এবং এর নাড়ি-নক্ষত্র জানেন, মুকুলবাবু তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ফলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে, তাঁকে দলের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝিয়ে এসেছেন এমন আশঙ্কা রয়েছে শীর্ষ তৃণমূল নেতৃত্বের মনে।
শুধু মুকুল রায় নন, রাজ্য সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতে তৎপর রয়েছে তাঁর শিবিরের অন্য নেতারাও। আজ কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে মুকুলের প্রথমে একটি বৈঠক হয়। তার পরেই বেঙ্কাইয়ার সঙ্গে দেখা করেন সিউড়ির বিদ্রোহী বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। গত সাত দিনের মধ্যে এ নিয়ে দু’বার দেখা করলেন তিনি। স্বপনকান্তি জানান, “এর আগে এসে আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে সিউড়ি পুরসভার জলপ্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থের নয়ছয় নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় যোজনার টাকা স্থানীয় পুরসভা কর্তৃপক্ষ চুরি করেছে। আজ বেঙ্কাইয়া নায়ডু জানিয়েছেন, মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তারা শীঘ্রই রাজ্য গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করবে।”