পুলিশের বিরুদ্ধে রাস্তায় মদন-ঘনিষ্ঠ ট্যাক্সি সংগঠন

খোদ পরিবহণমন্ত্রীর হাতে গড়া ট্যাক্সি সংগঠনের মুখেই এ বার পুলিশি জুলুমের অভিযোগ। যার প্রেক্ষিতে সোমবার হাওড়ার বঙ্গবাসী মোড়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে ধর্মঘট করল তারা। দিন কয়েক আগে একই অভিযোগে আন্দোলনে নেমেছিল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু। রবিবারই শাসক দলের ট্যাক্সি সংগঠনকে ঢেলে সাজার কথা ঘোষণা করেছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তার পরে রাত পোহাতেই শাসক দলের ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর এই কর্মসূচি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫২
Share:

হাওড়ায় তৃণমূলপন্থী ট্যাক্সি সংগঠনের ধর্মঘট। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

খোদ পরিবহণমন্ত্রীর হাতে গড়া ট্যাক্সি সংগঠনের মুখেই এ বার পুলিশি জুলুমের অভিযোগ। যার প্রেক্ষিতে সোমবার হাওড়ার বঙ্গবাসী মোড়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে ধর্মঘট করল তারা। দিন কয়েক আগে একই অভিযোগে আন্দোলনে নেমেছিল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু। রবিবারই শাসক দলের ট্যাক্সি সংগঠনকে ঢেলে সাজার কথা ঘোষণা করেছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তার পরে রাত পোহাতেই শাসক দলের ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর এই কর্মসূচি। অনেকের মতে, বিরোধী ট্যাক্সিচালক ও মালিক সংগঠনের আন্দোলনকে ভোঁতা করতেই এই ভূমিকা নিয়েছে শাসক দলের ট্যাক্সি সংগঠন।

Advertisement

শাসক দলের ওই সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, পুলিশ বিনা কারণে হাওড়ার বঙ্গবাসী মোড়ে ট্যাক্সিচালকদের হয়রান করছে। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডেই দাঁড়াতে দিচ্ছে না। দাঁড়ালেই জরিমানা করছে। মন্ত্রী অবশ্য এই ঘটনাকে ‘বিক্ষিপ্ত’ বলেই আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “কিছু চালকের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলা হয়েছিল। চালকদের কিছুু দাবি ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই ঘটনা মিটেও গিয়েছে।”

কয়েক মাস আগেই পুলিশি জুলুমের অভিযোগ তুলে দফায় দফায় ধর্মঘট, বিক্ষোভ সমাবেশ, আন্দোলন করেছিল সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, বিএমএস-সহ বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলি। তখন তার বিরোধিতা করেছিল তৃণমূলের ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স অ্যাসোসিয়েশন’। কিন্তু বিরোধিতা করতে গিয়ে ট্যাক্সিচালকদের মধ্যে তাদের সংগঠনের জনপ্রিয়তা ক্রমশই কমেছে বলে মনে করছেন প্রোগ্রেসিভের নেতারা। সে জন্যই সোমবার থেকে তাঁরা আম-ট্যাক্সিচালকদের স্লোগান ‘হাইজ্যাক’ করতে রাস্তায় নেমেছেন বলে দাবি বিরোধী সংগঠনগুলির।

Advertisement

হাওড়া ময়দান সংলগ্ন বঙ্গবাসী ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে এ দিন সাড়ে তিনশো ট্যাক্সি ধর্মঘটে যোগ দেয়। বিক্ষোভকারী ট্যাক্সিচালকদের অভিযোগ, পুলিশ মঙ্গলাহাটের দু’দিন তাঁদের ওই স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। তার উপরে নানা কারণ দেখিয়ে চালকদের জরিমানাও করা হচ্ছে। পুলিশের এই জুলুমবাজি বন্ধ না হলে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্যাক্সি ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবাসী স্ট্যান্ডের প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাকেশ সিংহ। তিনি বলেন, “পুলিশ এখানে জোর করে ট্যাক্সি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। স্ট্যান্ডে কোনও ট্যাক্সি দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছে না। জোর করে অন্য জায়গায় পাঠানো হচ্ছে।”

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। তাদের বক্তব্য, ওই স্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত যাত্রী প্রত্যাখ্যানের নালিশ আসছিল, বিশেষত সোম ও মঙ্গলবার হাটের দু’দিন। পুলিশের পক্ষ থেকে সে কারণে একটি অস্থায়ী ট্যাক্সি বুথ করে চালকদের নিয়ম মেনে যাত্রী নিয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছিল। এতেই ট্যাক্সিচালকেরা বেঁকে বসেছেন বলে অভিযোগ পুলিশের। হাওড়ার ডিসি (ট্রাফিক) সুমিত কুমার বলেন, “ট্যাক্সি যাত্রী পরিবহণের জন্য, হাটের মাল পরিবহণের জন্য নয়। তা-ও আমরা হাটের দু’দিন অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু যাত্রীদের প্রত্যাখ্যান করে ট্যাক্সিতে হাটের মাল নিতে দেব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন