প্রতীকী ছবি।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগের দশ মিনিট। যার উপরে বিশেষ খেয়াল রাখতে বলছেন পরীক্ষকেরা। রাত পোহালেই সোমবার স্কুল স্তরে জীবনের প্রথম অন্যতম পরীক্ষা আইসিএসই-তে বসতে চলেছে পরীক্ষার্থীরা। হাতে কিছুটা সময় নিয়ে পরীক্ষা শেষ করা এবং হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ তো থাকলই, পাশাপাশি তাদের আত্মবিশ্বাস অটুট রাখতে অভিভাবকদেরও সচেষ্ট হতে বললেন বিশেষজ্ঞেরা।
বরাহনগরের সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের প্রিন্সিপাল তথা আইসিএসই স্কুল সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নবারুণ দে-র পরামর্শ, পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময়ের অন্তত দশ মিনিট আগে লেখা শেষ করতে হবে। ওই সময়ে গোটা প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষার উত্তরপত্রটিকে ভাল করে মিলিয়ে দেখা উচিত কোনও প্রশ্ন বাদ রয়ে গেল কিনা। অথবা খাতায় কোনও ভুল থাকলেও তা চোখে পড়বে। তিনি জানান, অন্য বছরে এ রকম দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র ওই দশ মিনিটে উত্তরপত্র ও প্রশ্নপত্রকে উল্টে-পাল্টে দেখতে গিয়ে পরীক্ষার্থীরা দেখতে পেয়েছে কোনও জানা প্রশ্ন বাদ পড়ে যাচ্ছিল। এ ভাবে দশ নম্বর পর্যন্ত বাড়াতে পেরেছে তারা। ‘‘মাথা ঠান্ডা রেখে মন দিয়ে উত্তরপত্র ও প্রশ্নপত্র অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত’’,— বললেন নবারুণবাবু।
মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের প্রিন্সিপাল দময়ন্তী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্লাসের পরীক্ষার মতোই এই পরীক্ষাকে ভাবা উচিত। বাড়তি আশঙ্কার প্রয়োজন নেই। তবে পরীক্ষার সময়ে কোনও অসুবিধা হলে যিনি নজরদারি করছেন তাঁকে বিষয়টি বলা দরকার।’’ এক শিক্ষক জানান, বেলা ১১টা থেকে পরীক্ষা শুরু হলেও পৌনে এগারোটার সময়েই প্রশ্নপত্র দিয়ে দেওয়া হবে। তাই প্রথমে মাথা ঠান্ডা রেখে প্রশ্নপত্রটি ভাল করে খুঁটিয়ে পড়তে হবে।
মনোরোগ চিকিৎসকেরা জোর দিচ্ছেন পরীক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসের উপরে। মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের সব সময় মনে হয় বেশ কিছু জিনিস পড়া বাকি রয়ে গিয়েছে এবং সেখান থেকেই পরীক্ষার প্রশ্ন আসবে, এই ধারণাটাই ভুল।’’ তিনি জানান, পরীক্ষার্থীরা নিজেরাই বুঝতে পারবে অতীতেও বিভিন্ন পরীক্ষায় এ রকম মনে হয়েছে। কিন্তু তার পড়া অংশ থেকেই প্রশ্ন এসেছে এবং তারা বেশ ভাল ফলও করেছে। তাই অযথা দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দেন তিনি। আত্মবিশ্বাস বজায় রাখাটা জরুরি বলে জানান তিনি।
তবে অভিভাবকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘সন্তানদের সামনে অতীতের কোনও ভুল তুলে ধরে তাদের আরও চাপে ফেলবেন না। প্রয়োজনে তাদের এটা বলুন যে তার প্রস্তুতি খুব ভাল হয়েছে। অন্যদের থেকে অনেকটাই সে এগিয়ে। ইতিবাচক কথায় পরীক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তা কাটাতে পারে এবং তার ফলও ভাল হয়।’’
শরীর সুস্থ রাখার জন্য চিকিৎসকেরও বেশ কয়েকটি পরামর্শ দিচ্ছেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘পরীক্ষার ক’টা দিন বাইরের খাবার ও বাইরের জল এড়িয়ে চলতে হবে। ভরপেট খাওয়া একেবারেই নয়। রোদ এড়িয়ে না চললে সর্দিগর্মির সম্ভাবনাও থাকে।’’ তবে তাঁর মত, সব থেকে বেশি প্রয়োজন রাতে দুশ্চিন্তা মুক্ত, ভাল ঘুম।