মায়ের পাশে মমতা। কাঞ্চনজঙ্ঘায় নিখোঁজ ছন্দা গায়েনের হাওড়ার বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার দীপঙ্কর মজুমদারের তোলা ছবি।
শুক্রবার দুপুরেই ফেনে একপ্রস্ত কথা বলেছিলেন। তার পরে সন্ধ্যায় ছন্দা গায়েনের বাড়িতে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছন্দার মা জয়াদেবীকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নেপাল সরকার উদ্ধারকাজে বিশেষ বাহিনী নামিয়েছে। উদ্ধারকাজ চলছে। রাজ্যের দলও এই কাজ তদারকি করছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ছন্দার পরিবার।
এ দিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হাওড়া কোনা বাগপাড়ায় ছন্দার বাড়িতে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূলের হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দুই গায়ক সৌমিত্র রায় ও ইন্দ্রনীল সেন। ছন্দার মা জয়াদেবী ও অন্যদের সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবার সূত্রের খবর, উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে বলে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই এভারেস্টজয়ী উজ্জ্বল রায় ও দেবদাস নন্দী-সহ রাজ্য সরকারের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সেই কাজে তদারকি করছে বলেও তিনি জানান। ছন্দার পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী কাঞ্চনজঙ্ঘায় যেতেও ইচ্ছুক ছিলেন। কিন্তু বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে অনুমতি পাওয়া-সহ নানা সমস্যায় তা হয়নি বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জানিয়েছেন।
বস্তুত, বুধবার সকালে ছন্দাদের নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই তাঁর বাড়িতে শাসক দলের নেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাঠে নেমে পড়েন বিরোধী নেতারাও। প্রত্যেকেই গিয়ে উদ্ধারকাজ নিয়ে আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বলেছিলেন, উদ্ধারকাজ নিয়ে রাজনীতি তাঁরা চান না। উদ্ধারকাজের অগ্রগতি জানতে না পেরে রাজ্য ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন জয়াদেবীও।
উদ্ধারকাজ কতটা এগিয়েছে, তা নিয়ে সকাল থেকেই ছন্দার পরিবারের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। এ দিন সকালে জয়াদেবী প্রথমে হাওড়ার তৃণমূল নেতা অরূপ রায়কে ফোন করেন। তিনি জয়াদেবীকে যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দেন। অরূপকে ফোন করা হলে তিনি আশ্বাস দেন, উদ্ধারকাজ চলছে। যুবকল্যাণ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরে ছন্দার পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ফোন করে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে পরে ফোন করতে বলা হয়। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী ফোন করে ছন্দার মা-দাদার সঙ্গে কথা বলেন। মিনিট কুড়ি কথোপকথন হয়।
এ দিন নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, নেপালে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছে রাজ্য সরকার। হাইকমিশনের ফার্স্ট অফিসার এস রাওকে জানানো হয়েছে, হেলিকপ্টার-সহ উদ্ধারকাজের খরচ রাজ্য সরকার দেবে। একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, দুপুরে ফোনে কথা বলার পর ছন্দার মায়ের উৎকণ্ঠা আঁচ করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণেই সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে বেরোনোর পর বাড়িতে হাজির হন।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ছন্দার বাড়ি থেকে বেরোন মমতা। উদ্ধারকাজ কতটা এগিয়েছে, এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “কতটা এগিয়েছে, তা কী করে জানব! আমি তো এখানে।” তবে উদ্ধারকাজ চলছে বলেই তিনি জানান।