মঙ্গলবারই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হচ্ছে।
মদন মিত্রর গ্রেফতারির প্রতিবাদে আলিপুর আদালত চত্বরে হাঙ্গামা বাধিয়েছিল তৃণমূল। সেই হাঙ্গামার জেরেই কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান তৃণমূলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছেন। তৃণমূলের হাতে সিবিআইকে হেনস্থা হতে হচ্ছে---এই অভিযোগ তুলে আদালতের নজরদারিতে তদন্তের আর্জি জানানো হবে।
আবদুল মান্নানের জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্ট সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। ওই মামলার সময় বারবার আর্জি জানিয়েও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও সাহায্য পাননি মান্নান। এ বারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মান্নানকে যে হাইকম্যান্ড যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে, তা নয়। মান্নানকে প্রাণনাশের হুমকি, ভয় দেখানো, টেলিফোনে-ফেসবুকে গালিগালাজের মুখে পড়তে হচ্ছে। সোমবার রাহুল গাঁধীর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের বৈঠকেও এই প্রসঙ্গ উঠেছে। তার পরেও হাইকম্যান্ড পাশে দাঁড়াবে, এমন ইঙ্গিত নেই। তবু ফের আইনি লড়াইয়ের বৃহত্তর পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন মান্নান।
শনিবার মদনকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে তৃণমূল সমর্থকরা গোলমাল বাধান। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মান্নান। এ দিনই দিল্লিতে এসে সুপ্রিম কোর্টে যান তিনি। সিবিআই তদন্তের দাবিতে মামলার আইনজীবী ছিলেন যিনি, সেই শুভাশিস ভৌমিকের সঙ্গে আইনি খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করেন। ওই মামলায় যিনি সওয়াল করেছিলেন, সেই আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও সেখানে হাজির ছিলেন। ঠিক হয়, দেরি না করে মঙ্গলবার দুপুরেই মামলা করা হবে। আলিপুর আদালতে তৃণমূলের হাঙ্গামার ভিডিও সিডি, সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হবে। মান্নানের যুক্তি, “শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআই অফিসারদের হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। তদন্তের কাজে বাধা দেওয়ার অর্থ আদালতের অবমাননা। এই অভিযোগের পাশাপাশি আমরা সুপ্রিম কোর্টের নজরদারি চাইব।”
সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের তরফে চেষ্টা করা হয়েছিল যাতে লোকসভা নির্বাচনের আগে মামলার কোনও ফয়সালা না হয়। কিন্তু ভোটের আগেই সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী সারদা কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছিলেন। এখন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও সারদা নিয়ে মমতাকে নিশানা করছেন। কিন্তু মজার কথা হল, নিজেদের দলের নেতার করা মামলার কোনও ফায়দা তোলার চেষ্টা করেননি রাহুল গাঁধী। বরং তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়া হবে কি হবে না, সেই দোটানায় তিনি আটকে পড়েছিলেন।
এ দিন রাহুলের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের বৈঠকে প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, সুপ্রিম কোর্টে মামলার জন্য মান্নানের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। প্রথম বার মামলার সময়ও মান্নানকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল। এ বারও ফের হুমকি শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “টেলিফোনে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফেসবুকে গালিগালাজ করা হচ্ছে। আমি অবশ্য এ সবে ভয় পাচ্ছি না।”