বিক্ষিপ্ত, বিচ্ছিন্ন ভাবে বিরোধিতা অনেক দিন ধরেই চলছিল। এ বার হল ভাড়া করে ঘরোয়া সভায় জড়ো হয়ে বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হলেন সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ কিছু নেতা-কর্মী। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের নাম না করে সেখানে বলা হল, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র কোনও মুখ নেই। এ রাজ্যে টাকা নিয়ে দলের নেতা করা হচ্ছে। অতএব দলের সদস্য এবং ভোট বাড়ানোর জন্য হিন্দুত্বের দাওয়াই প্রয়োগ করতে হবে।
লোকসভা ভোটে ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি-র প্রার্থী ছিলেন অভিজিৎ দাস। মহাজাতি সদনের অ্যানেক্স হলে এ দিনের সভার উদ্যোক্তা ছিলেন তিনিই। সেখানে এক চিকিৎসক নেতা মৃণালকান্তি দেবনাথ বলেন, “আদর্শ এবং সংগঠন দুটোই মজবুত হওয়া দরকার। সনাতন ধর্মের আদর্শ থেকে সরে গেলে বিজেপি থাকবে না। আবার সংগঠন না হলে ২০১৬-য় বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিততে পারবে না।” ওই চিকিৎসকের দাবি, “সাধারণ মানুষ পরিবর্তনের পরিবর্তন চান। কিন্তু ফুটো নৌকোয় তাঁরা উঠবেন না।” স্বপন দাস নামে আর এক নেতা বলেন, “দলের পক্ষে ভোটের হাওয়া ওঠে, থেমেও যায়। দলে কারা কেন আসছে, সেটা দেখা জরুরি। ধীরে ধীরে অগ্রগতি হলে ভাল ফল হয়। দ্রুত ঝড় এলে পাল্টা ঝড়ও তাড়াতাড়িই আসে।” ওই সভায় অভিজিৎবাবু মন্তব্য করেন, “স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকতে হচ্ছে। অনেকেরই ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক।”
সমালোচনা বন্ধ রেখে বুথভিত্তিক সদস্য বাড়ানোর কথা বলেন অন্য এক নেতা। তখন তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বিজেপি মনোভাবাপন্ন এক কর্মী প্রশ্ন তোলেন, “কেন বিজেপি-র সদস্য হব? মুকুল রায়কে বিজেপি যদি নেয়, তা হলে আমি কেন এই দলে যোগ দেব?” বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য এবং সহ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) দিলীপ ঘোষ আমন্ত্রণ পেয়েও ওই সভায় যাননি। দলের বক্তব্য, নির্বাচনী কমিটির বৈঠক থাকায় তাঁরা যেতে পারেননি। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্য সভাপতিই তাঁদের ওই সভায় যেতে নিষেধ করেছিলেন। সভা সম্পর্কে রাহুলবাবুর প্রতিক্রিয়া, “কেউ বিজেপি-র ভাল করতে চাইলে করতে পারেন। তবে অনেকেই অনেক জায়গায় অনেক কথা বলেন। সকলের সব কথার প্রতিক্রিয়া দেওয়া কোনও সংগঠনের পক্ষে সম্ভব নয়।”