মা ও শিশুর অপমৃত্যুতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

অস্বাভাবিক দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় থানার পুলিশের উপর আস্থা রাখতে না পেরে সিআইডি-র হাতে তদন্তভার তুলে দিতে নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৫ ২০:৫১
Share:

অস্বাভাবিক দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় থানার পুলিশের উপর আস্থা রাখতে না পেরে সিআইডি-র হাতে তদন্তভার তুলে দিতে নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।

Advertisement

পুলিশ জানায়, খড়দহ থানার আগরপাড়ার একটি বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে গত ২৫ মে পায়েল গোমস নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছিল তাঁর চার বছরের পুত্র অঙ্কুরের মৃতদেহ। শিশুর গলার নলি কাটা ছিল বলে পুলিশ জানায়। পায়েলের বাবা তাঁর জামাই পিও গোমসের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ পিও-কে গ্রেফতার করে। কিন্তু একই সঙ্গে প্রাথমিক তদন্তে জানায়, পায়েলের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। যা থেকে পুলিশের অনুমান, ওই গৃহবধূ প্রথমে নিজের সন্তানকে খুন করে পরে আত্মঘাতী হন। পিও বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন।

কিন্তু পায়েলের বাবা প্রফুল্ল মণ্ডল পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে সন্তুষ্ট হননি। তাঁর আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী জানান, খড়দহ থানার পুলিশের তদন্তে ভরসা করতে না পেরে এবং সঠিক তদন্ত চেয়ে প্রফুল্লবাবু অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ১৪ অগস্ট খড়দহ থানার পুলিশকেও মামলায় যুক্ত করা হয়।

Advertisement

আইনজীবী কৌস্তভ জানান, মামলার আবেদনে পুলিশের তদন্তের ফাঁকগুলি তুলে ধরা হয়। এর আগে মামলাটির শুনানি হয় গত ১৯ অগস্ট। সেই দিন ওই আইনজীবী আদালতে জানান, পায়েলের ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করে। কিন্তু প্রফুল্লবাবুকে থানায় ডেকে পাঠিয়ে পুলিশ জানতে চায়নি, ওই নোটের লেখা তাঁর মেয়ের হাতের কি না। পুলিশ এই ব্যাপারে হস্তরেখা বিশারদেরও সাহায্য নেয়নি। তা ছাড়া যে অস্ত্র ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়, সেটিরও ফরেনসিক পরীক্ষা করেনি পুলিশ। ওই দিন বিচারপতি দত্ত নির্দেশ দেন, ৩১ অগস্ট খড়দহ থানার ওসি শৈবালকুমার বাগচীকে আদালতে হাজির করাতে।

এ দিন প্রফুল্লবাবুর আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, ঘটনার সঠিক তদন্ত শেষ না করেই গত ১৯ অগস্ট মামলার চার্জশিট পেশ করে অভিযুক্ত পিও-র বিরুদ্ধে বধূনির্যাতন ও পণের জন্য মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছে পুলিশ। সরকারি আইনজীবী সাধন রায়চৌধুরী আদালতে জানান, ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করা না হলে অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে যেতে পারেন। সেই কারণেই পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে।

এ দিন বিচারপতি দত্ত খড়দহ থানার ওসি-র কাছে জানতে চান, কবে মামলা দায়ের হয়েছে এবং তাঁর থানার পুলিশকে কবে এই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। ওসি তা জানাতে না পারায় বিচারপতি দত্ত তাঁর উদ্দেশে জানান, এই প্রশ্নের উত্তরই তাঁর জানা নেই। তা হলে ঘটনার তদন্ত কী হয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে। এর পরেই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি-র হাতে তুলে দেন বিচারপতি দত্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন