হদিস দিতে পারলেই ১০ লাখ। এবং অন্তত এই ইনাম ঘোষণার সুবাদে কলকাতার আমির রেজা খান এবং কর্নাটকের ভটকল ভাইদের মতো জঙ্গি চাঁইদের সমান ‘মর্যাদা’ পেয়ে যাচ্ছে বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ পাঁচ জন!
ওই পাঁচ অভিযুক্তকে ধরতে সম্প্রতি এই পুরস্কার ঘোষণা করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সে-দিক দিয়ে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের (আইএম) প্রতিষ্ঠাতা রিয়াজ ভটকল, ইকবাল ভটকল ও আমির রেজা খানদের সঙ্গে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সন্দেহভাজন সদস্য সাজিদ, নাসিরুল্লা, তালহা শেখ, কওসর ও মৌলানা ইউসুফ শেখদের কোনও তফাত নেই। কারণ, এদের প্রত্যেকের জন্যই ১০ লক্ষ টাকা ইনাম দিতে চায় এনআইএ।
এখনও পর্যন্ত এনআইএ-র ঘোষিত সর্বোচ্চ পুরস্কারমূল্য ১৫ লক্ষ টাকা। সিপিআই (মাওবাদী)-এর সম্পাদক মুপালা লক্ষ্মণ রাও ওরফে গণপতিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ওই টাকা পাওয়া যাবে। এনআইএ ঘোষিত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারমূল্য ১০ লক্ষ। খাগড়াগড় কাণ্ডে পলাতক পাঁচ জন ছাড়াও অন্য ১৬ জনের প্রত্যেকের জন্য এনআইএ আগেই এই ইনাম ঘোষণা করেছে। সেই তালিকায় আমির রেজা, ইকবাল ভাইয়েরা ছাড়াও নাম রয়েছে মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নামবালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজ, থিপ্পিরি তিরুপতি ওরফে দেওজি এবং অন্য এক মাওবাদী শীর্ষ নেতা বালমুরি নারায়ণ রাও ওরফে প্রভাকরের। আবার আইএমের আজমগড় মডিউল বা গোষ্ঠীর চাঁইদের মধ্যে আরিজ খান ওরফে জুনেইদ এবং শাহনওয়াজ আলমের জন্যও ১০ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছে এনআইএ।
সন্ত্রাসবাদী হিসেবে আমির রেজা খান এবং ভটকল ভাইদের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব রয়েছে। কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারের সামনে জঙ্গি হামলা-সহ ভারতের বহু নাশকতায় ওরা অভিযুক্ত। আর বহু হত্যা ও নাশকতার মামলায় অভিযুক্ত মাওবাদী শীর্ষ নেতারা। একই কথা প্রযোজ্য শাহনওয়াজ আলম, জুনেইদের মতো আইএমের আজমগড় মডিউলের হোতাদের ক্ষেত্রেও। সেই তুলনায় সাজিদদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ভাবে নাশকতা ঘটানোর অভিযোগ এখনও নেই। তবু তাদের মাথার ভটকলদের সমান মাথার দাম ধার্য করার কারণ কী? এনআইএ-র বক্তব্য, সাজিদদের চক্রটি কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে বহু আইইডি (ইম্প্রোভাইজ্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) পাঠিয়েছে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সূত্রে যে জঙ্গি-জালের হদিস মিলেছে, তা কত দূর বিস্তৃত এবং পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের আর কারা এতে জড়িত, তা জানতে ওই পাঁচ জনকে হাতে পাওয়া জরুরি। এত বেশি ইনাম কারণ সেই কারণেই। খাগড়াগড় কাণ্ডে এনআইএ এখনও কাউকে ধরতে পারেনি। রাজ্য পুলিশই দুই মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে।