কলেজে ভর্তির মরসুমে ছাত্র সংঘর্ষ থামার নাম নেই। কোথাও শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধেই হামলা চালানোর অভিযোগ উঠছে, আবার কোথাও আক্রান্ত তৃণমূলেরই ছাত্র-নেতা।
শনিবার দুপুরে মেদিনীপুর কমার্স কলেজের সামনে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্র পরিষদ (সিপি) এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। জখম হন দু’পক্ষের ৫ জন। অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁয় বামনপুকুর হুমায়ুন কবীর মহাবিদ্যালয়ের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি সমীরণ মণ্ডলের মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে ঘটনার পর সমীরণকে মিনাখাঁ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এবিভিপি-র ১৫ জনের নামে অভিযোগ করেছে টিএমসিপি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “দিকে দিকে আমরাই আক্রান্ত। এবিভিপি বলে কিছু নেই। বিজেপির কিছু কর্মী আমাদের ছেলেদের মারধর করছে।”
মেদিনীপুর কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদ দীর্ঘদিনই ছাত্র পরিষদের দখলে। কলেজের সামনে তাদের শিবিরে এ দিন সকাল থেকেই ছাত্রছাত্রীদের ভাল ভিড় ছিল। তুলনায় ফাঁকা ছিল টিএমসিপি-র ক্যাম্প। সেই আক্রোশেই টিএমসিপির কর্মী-সমর্থকেরা ছাত্র পরিষদের শিবিরে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। তারপরই লাঠিসোটা, বাঁশ নিয়ে চলে মারামারি। দু’পক্ষের জখমদের মধ্যে ছাত্র পরিষদের দুই নেতাশহর সভাপতি শুভজিৎ দাস এবং কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়কে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করতে হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়।
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুল ঘটনার জন্য আঙুল তুলেছেন টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির দিকে। রমাপ্রসাদের দাবি, “যারা হামলা চালিয়েছে, তারা আমাদের কেউ নয়।” ঘটনার সময় মেদিনীপুরে ছিলেন না বলেও দাবি তাঁর।
মিনাখাঁর কলেজে গোলমালের সূত্রপাত শুক্রবার। সকালে অনলাইনে ভর্তির দাবিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে এবিভিপি সমর্থকদের সঙ্গে টিএমসিপি-র ছেলেদের একপ্রস্ত বচসা হয়। তারই জেরে রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি সমীরণ মণ্ডলের উপরে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। সমীরণের মাথায় রিভলবার ধরে রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। গলায় ও বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। শনিবার হাসপাতালে শুয়ে সমীরণ বলেন, “সময়মতো লোকজন না এলে ওরা আমাকে মেরে ফেলত।” যুব তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুবীর সরকারের কথায়, “কলেজে ভর্তি নিয়ে সামান্য বচসা হয়। তা নিয়ে এবিভিপি-র ছেলেরা খুনের চেষ্টা করবে ভাবতে পারিনি।” ঘটনার সঙ্গে তাঁদের দলের সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন বিজেপি-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শুভ্রজিৎ ভট্টাচার্য।