মমতায় বিশ্বাস হারান সুশীলও, দাবি মেয়ের

তৃণমূলের বিধায়ক সুশীল বিশ্বাসের মৃত্যুতে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভায় উপনির্বাচন। তার হাতে গোনা কয়েকটা দিন আগে, সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিলেন সুশীলবাবুর কন্যা, আইনজীবী সুনয়না বিশ্বাস (ঘোষ)। তাঁর দাবি, শেষের দিকে তাঁর বাবাও আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সততার প্রতীক বলে মনে করতেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫২
Share:

কৃষ্ণগঞ্জে সুনয়না বিশ্বাসের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বিজেপির পতাকা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

তৃণমূলের বিধায়ক সুশীল বিশ্বাসের মৃত্যুতে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভায় উপনির্বাচন। তার হাতে গোনা কয়েকটা দিন আগে, সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিলেন সুশীলবাবুর কন্যা, আইনজীবী সুনয়না বিশ্বাস (ঘোষ)। তাঁর দাবি, শেষের দিকে তাঁর বাবাও আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সততার প্রতীক বলে মনে করতেন না।

Advertisement

সোমবার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া রেলবাজার হাইস্কুলের খেলার মাঠে বিজেপির জনসভা ছিল। সেখানে রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাহুল সিংহ সুনয়নার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। মঞ্চে সুনয়নাদেবী বলেন, “বাবা শেষের দিকে বলতেন, মমতা এখন সততার প্রতীক নয়, সারদার প্রতীক। ভাগ্যিস বাবা এখন বেঁচে নেই। থাকলে তিনি দুঃখ পেতেন।” তিনি জানান, লোকসভা ভোটের আগেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু তখন বাবা অসুস্থ ছিলেন বলে যোগ দিতে পারেননি। শুধু মঞ্চ থেকেই নয়, পরে ফোনেও সুনয়নাদেবী তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “বাবা তৃণমূলে এসে দেখেন যে, এখানে সকলেই নেতা। কেউ কাউকে সম্মান করে না। শেষের দিকে বাবা দলকে এড়িয়ে চলতেন।”

যদিও এমনটা মানতে রাজি নন জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। তিনি বলেন, “সুনয়নাদেবী তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। দল তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ার যোগ্য মনে করেনি। সেই হতাশা থেকেই কে কী বলল তাতে আমাদের দলের কিছু যায় আসে না। তা ছাড়া, সুনয়নাদেবী তো ওই কেন্দ্রের ভোটারও নন।” অন্য দিকে, বিজেপির নদিয়া জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী বলেন, “তৃণমূল থেকে বেরিয়ে যাঁরাই সত্যি বলছেন, তাঁদের সম্পর্কেই তৃণমূল এমন কথা বলছে।”

Advertisement

স্বরূপনগরের সভায় বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। ছবি: নির্মল বসু

অস্বস্তি এড়াতে তৃণমূল নেতৃত্ব এখন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ভোটের টিকিট না পেয়ে ‘হতাশ’ হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুনয়না। বিজেপি নেতৃত্ব যার পাল্টা যুক্তি খাড়া করে বলছেন, যে-ই তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন, তাঁদের সম্পর্কেই নানা কটূক্তি শুরু করছেন শাসক দলের নেতারা। এই প্রসঙ্গেই মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের প্রসঙ্গও আনছেন তাঁরা। মঞ্জুল-পুত্র সুব্রতও একই সঙ্গে দল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বনগাঁ উপনির্বাচনে দলের টিকিটও পেয়েছেন। কিন্তু দল ছাড়ার দিন থেকেই পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধেও নানা ভাবে আক্রমণ শানাচ্ছেন শাসক দলের নেতারা। ব্যক্তিগত কুৎসাও বাদ যাচ্ছে না। বিজেপির প্রশ্ন, এতই যদি আপত্তি, তা হলে যত দিন দলে ছিলেন, তত দিন কেন এঁদের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা?

বাবার মৃত্যুর পর থেকে বিজেপির দিকে এক পা বাড়িয়েই রেখেছেন সুনয়নাদেবী, তা অবশ্য ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছিল। ২৪ জানুয়ারি কৃষ্ণগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী মানবেন্দ্রনাথ রায় রানাঘাটে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছিলেন। সে দিন তাঁর সঙ্গে দেখা করেন সুনয়নাদেবী। পরে জানান, তিনি চাইছেন কৃষ্ণগঞ্জ কেন্দ্রে জয়ী হোন মানবেন্দ্রনাথ। গত শনিবার কৃষ্ণগঞ্জের বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে সিদ্ধার্থনাথ সিংহের সঙ্গেও দেখা করেন সুনয়না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন