লাঞ্চ-ডিনারে জামাইষষ্ঠীও ‘কর্পোরেট’

জেন-ওয়াই জামাইকে হাতে রাখতে কর্পোরেট টিপস। আহ্লাদেরও তো ব্র্যান্ডিং করা যায়! মিটিং-কনফারেন্স, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি গড়তে ব্যস্ত শাশুড়ি। এ দিকে ইস্তানবুল ঘুরে, জাপান-কাবুল ঘুরে বাবাজীবন ফিরবেন ঘরে। তার আদর তো আর যে সে ভাবে হয় না।

Advertisement

সুচন্দ্রা ঘটক ও সোমঋতা ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০২:৫৫
Share:

অঙ্কন: সুমিত্র বসাক।

জেন-ওয়াই জামাইকে হাতে রাখতে কর্পোরেট টিপস। আহ্লাদেরও তো ব্র্যান্ডিং করা যায়!

Advertisement

মিটিং-কনফারেন্স, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি গড়তে ব্যস্ত শাশুড়ি। এ দিকে ইস্তানবুল ঘুরে, জাপান-কাবুল ঘুরে বাবাজীবন ফিরবেন ঘরে। তার আদর তো আর যে সে ভাবে হয় না। তা ছাড়া, রকমারি দাওয়াতে জামাইকে ‘এক দিন কা সুলতান’ সাজিয়ে তোলার তৃপ্তি থেকেও বঞ্চিত হতে চান না আধুনিকা শাশুড়িমায়েরাও। হোন না তিনি ঘরে-বাইরে হাজারো কাজে ব্যস্ত। পরিবারকে খুশি রাখতেও তো কখনও কাজে লেগে যায় অফিসে শেখা ছোটখাটো কেরামতি। উপলক্ষ যা-ই হোক, মেয়ে-জামাই-নাতি-নাতনি নিয়ে জম্পেশ একটা টিম লাঞ্চ টার্গেট তো পরিষ্কার। কর্পোরেট আর পারিবারিক শিক্ষার ফিউশন ঘটিয়ে কোনও এক রেস্তোরাঁয় ডেকে ফেললেই হল। কন্টি-চিনা-মোগলাই ফিউশন খাদ্যে গ্লোবাল জামাইয়ের মন মজানোও সহজ।

রোজের কেক-স্যান্ডউইচে ব্যাজার বিলেত ফেরত ‘সুলতান’-এর একঘেয়েমি কাটাতে বাদশাহি দাওয়াত যদি হয় শাশুড়ির লক্ষ্য, গন্তব্য হোক ধর্মতলার আমিনিয়া। সেখানে দাওয়াত-এ-জামাইষষ্ঠীর প্রথম চমকই শরবত-এ-আজম। বিগলিত হাসিটি মুখে আনতে সবেধন নীলমণিটির মোগলাই প্ল্যাটার সাজবে গলৌটি কবাব, মাটন বড়া কবাব, রেশমি কবাব, মাটন খরা কবাবে। আওয়াধি বিরিয়ানি, গার্লিক নান, তন্দুরি চিকেন করুক খানদানি সঙ্গত। বচ্ছরকার ফল দেওয়া হল না বলে চিন্তা? ফলের রাজার সঙ্গে ফিরনির ফিউশন আক্ষেপ ঘোচাবে। আম-ফিরনি আছে যে!

Advertisement

জামাই আদরে ফলের গুরুত্ব বরাবরই। সে কথা মাথায় রেখেছে দ্য পার্কের ‘স্যাফ্রন’ রেস্তোরাঁও। বিশেষ দিনটির জন্য সেখানে খাস আয়োজন মিষ্টি দই-কমলা ভোগ-বেক্ড ম্যাঙ্গো মিহিদানা ট্রায়োর লাসান ও হিমসাগর আম-কাঁঠাল-লিচুর প্ল্যাটারের। মেনুতে থাকবে পোস্ত লেহ্সুুনি তন্দুরি চিংড়ি, কাসুন্দি টেংরি কাবাব, সর্ষে ইলিশ ভাপা, আলু দিয়ে কচি পাঁঠার ঝোল। থাকছে গন্ধরাজ আলু পোস্ত, কমল ককরি কি সিখ, কড়াইশুঁটির পোলাও, কড়াইশুঁটি স্টাফ্ড আলু টিক্কিও।

হায়াতের ‘গুচি’ রেস্তোরাঁতে এই প্রথম বাঙালি বুফে। শোল মাছের চপ, মুরগির পাটিসাপটা, এঁচোড়ের কোপ্তা থেকে রকমারি সম্ভার।

ষষ্ঠীর খানাখাজানায় ফিউশনের চমক দিতে কোমর বেঁধেছে হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনাল। সেখানকার ‘মিথ’ রেস্তোরাঁয় থাকছে মানানসই আয়োজন। একই সঙ্গে জামাইয়ের পাতে পড়তে পারে কন্টিনেন্টাল, বাঙালি, চিনা রান্না। সাজিয়ে বসা যায় রেড ওয়াইনে রাঁধা ল্যাম্ব শ্যাঙ্ক আর পাস্তা, গার্লিক ফ্রায়েড রাইস দিয়ে ম্যান্ডারিন ফিশ অথবা সনাতন কলকাতার খাস মটন বিরিয়ানি, বাঙাল কায়দায় ইলিশ-ভাপা, পাবদার ঝাল, চিংড়ি নিয়ে।

হরেক দেশের রকমারি রেসিপিতে দিল খুশ করবে ঢাকুরিয়ার বিবি অফ তাজাসও। থাকছে স্পেনের পায়েলা, তাপাস, মায়ানমারের খাওসুয়ে, তাইল্যান্ডের চিকেন উইথ ব্যাম্বু শুট, রেড কারি ও গ্রিন কারি, আমেরিকার জাম্বালায়া। সঙ্গী যদি হয় পুরনো কলকাতার অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মাটন পোলাও, বাংলার চিংড়ির মালাইকারি, চিতল মাছের মুইঠ্যা ক্ষতি কী?

সল্টলেকের দ্য স্ট্যাডেলের ‘ফার্স্ট ইনিংস’ রেস্তোরাঁতেও রয়েছে জামাইয়ের রসনা বিলাসের নানা বন্দোবস্ত। যেমন কাঁঠাল, জামরুল, আম, লিচু, কলার প্ল্যাটার, হিমসাগর আমের ছানার পায়েস। ততক্ষণে ভোজ জমে যাবে ঘি-ভাত, ভেটকি পাতুরি, মাটন ডাকবাংলো।

জামাই-বাহিনীর আপ্যায়নে বাড়তি ব্যবস্থা রাখছে ভজহরি মান্না, ৬ বালিগঞ্জ প্লেসের মতো রেস্তোরাঁও।

সারা দিন তো চলল পাকস্থলীর জমকালো উদযাপন। তাই বলে কি বাড়িতে কোনও বন্দোবস্তই রাখবেন না? স্বল্পাহারী সর্বভুক বেচারাটির জন্য না হয় কিনে আনলেন হজমিগুলি আর জোয়ানের আরক!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন