সামনে উচ্চ মাধ্যমিক কী করে নম্বর বাড়বে সংস্কৃতে

শুদ্ধ লিখতে শব্দরূপ, ধাতুরূপ ঝালিয়ে নাও

শুদ্ধ বাংলা মানেই শুদ্ধ সংস্কৃত। শব্দরূপ, ধাতুরূপ ভাল ভাবে জানা থাকলে বাংলা ভাষায় যেমন দখল আসে, তেমনই সংস্কৃতেও। সাজেশনের পিছনে না-দৌড়ে শুদ্ধ সংস্কৃতে লিখতে পারার ক্ষমতা অর্জন করো।

Advertisement

তরণী সেন কর , রানিবাঁধ হাইস্কুলের শিক্ষক ও মুখ্য পরীক্ষক

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৪৩
Share:

শুদ্ধ বাংলা মানেই শুদ্ধ সংস্কৃত। শব্দরূপ, ধাতুরূপ ভাল ভাবে জানা থাকলে বাংলা ভাষায় যেমন দখল আসে, তেমনই সংস্কৃতেও। সাজেশনের পিছনে না-দৌড়ে শুদ্ধ সংস্কৃতে লিখতে পারার ক্ষমতা অর্জন করো।

Advertisement

সংস্কৃতের নতুন সিলেবাসের এটি দ্বিতীয় বছর। নতুন পাঠ্যসূচিতে নম্বর তোলার সুযোগ আগের চেয়ে বেশি। খুঁটিয়ে পড়লে পূর্ণ নম্বর তোলাও বিশেষ কঠিন নয়। কারণ নতুন সিলেবাসে প্রোজেক্টে ২০ নম্বর ছাড়াও মাল্টিপল চয়েসে ১৫, সংক্ষিপ্ত প্রশ্নে ১১ ও ব্যাকরণে ১৫ নম্বর রয়েছে।

সহায়ক পুস্তকের উপর নির্ভরশীল না হয়ে পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়লেই সমস্ত মাল্টিপল চয়েস ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে। আর প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে ব্যাকরণ লিখে-লিখে অভ্যাস করতে হবে। কারকের সূত্র যেন নির্ভুল হয়। সূত্র নির্ভুল লিখতে না পারলে শুধু কারক-বিভক্তি লেখাই ভাল। সমাস, অর্থ পার্থক্য, এককথায় প্রকাশ ও প্রত্যয় প্রতিদিন নিয়ম করে অনুশীলন করা দরকার।

Advertisement

গদ্যাংশ, পদ্যাংশ ও নাট্যাংশ থেকে একটি করে মোট তিনটি পাঁচ নম্বরের প্রশ্নের (মোট ১৫) উত্তর লিখতে হয়। ভাল করে পাঠ্যবই পড়া থাকলে এই প্রশ্নগুলির উত্তরও নিজে-নিজেই লিখে ফেলতে পারবে। উত্তর লেখার সময় পাঠ্যবই থেকে প্রাসঙ্গিক বাক্য উল্লেখ করা দরকার। তাই যতই উত্তর তৈরি করে রাখো না কেন, পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়তেই হবে।

ভাবসম্প্রসারণে থাকে চার নম্বর। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র মূল ভাবটি বুঝিয়ে দিলেই হবে। প্রসঙ্গ উল্লেখ করা নিষ্প্রয়োজন।

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসে রয়েছে আরও পাঁচ নম্বর। এই বইটির নির্বাচিত অংশগুলো খুঁটিয়ে পড়া জরুরি। সাহিত্যের ইতিহাস ও ভাষাতত্ত্বের প্রশ্নের উত্তরগুলি খাতায় লিখে ভাল ভাবে তৈরি করে ফেলতে হবে। সাহিত্যের ইতিহাসের মধ্যে ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে বরাহমিহিরের অবদান, প্রাচীন আয়ুর্বেদশাস্ত্রে চরকসংহিতার স্থান, মৃচ্ছকটিকম, স্বপ্নবাসবদত্তম গুরুত্বপূর্ণ। ভাষাতত্ত্বে পড়ে রাখো ভারতীয় আর্য ভাষা, তার স্তর ও রচনাকাল। ইন্দো ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর প্রধান দু’টি শ্রেণি ও দশটি উপশ্রেণি একটু বিস্তারিত ভাবে করে রাখলে ভাল হয়।

সংস্কৃত অনুবাদ ও অনুচ্ছেদ রচনাতে রয়েছে পাঁচ করে মোট দশ নম্বর। এখানেও পূর্ণ নম্বর তোলা বিশেষ কঠিন নয়। বঙ্গেষু বর্ষা, তব বিদ্যালয়ঃ, সংস্কৃতস্য উপযোগঃ, কবিষু কালিদাসঃ, বিদ্যাসাগরঃ, দূরদর্শনস্য প্রভাবঃ ইত্যাদি অনুচ্ছেদগুলি তৈরি করে রাখতে পারো। প্রশ্নপত্রে ৫-৬টি বাক্যে লিখলে হবে বললেও আমার মতে অন্তত সাত-আটটি বাক্য লেখা ভাল। তাহলে নির্ভুল ৫-৬টা বাক্য তার মধ্যে অবশ্যই পাওয়া যাবে এবং পূর্ণ নম্বর আসবে। এক্ষেত্রে প্রথমে সহজ-সরল বাংলায় সাত-আটটি বাক্য লিখে তারপর সেগুলিকে সংস্কৃতে রূপান্তর করো।

শুদ্ধ ভাবে অনুবাদ ও অনুচ্ছেদ লেখার জন্য একাদশ শ্রেণির শব্দরূপ ও ধাতুরূপ এবং কারক-বিভক্তি ভাল ভাবে ঝালিয়ে নিতে হবে। ব্যাকরণে স্পষ্ট জ্ঞান না থাকলে শুদ্ধ ভাবে লেখা কঠিন। কোনও শব্দের রূপ জানা না থাকলে ওই শব্দের সমার্থক শব্দের রূপ যেমন, স্ত্রী শব্দের রূপ জানা না থাকলে ভার্যা অর্থ ধরে লতা শব্দের রূপ করতে হবে। এই ভাবে অনুচ্ছেদ লেখা অভ্যাস করলে সংস্কৃত অনুবাদ করা আর কঠিন মনে হবে না। একই অনুশীলনে দু’য়ের অভ্যাস হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন