শ্রীরামপুরে ইন্ডিয়া জুটমিল দীপাবলির আগে খুলছে না

ইন্ডিয়া জুট মিলের শ্রমিক মহল্লা এ বার দীপাবলিতে নিষ্প্রভ থাকছে। রাজ্য প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সোমবার সমস্যার সমাধানসূত্র বেরোয়নি। তবে আগামী সোমবার কলকাতায় শ্রমমন্ত্রীর ঘরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। অর্থাত্‌, কালী পুজোর আগে ইন্ডিয়া জুট মিল খোলার সম্ভাবনা প্রায় নেই। মিল কর্তৃপক্ষের নামে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং শ্রমিকদের উপর জুলুমের অভিযোগে শ্রম দফতরে স্মারকলিপি দেয় মিলের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। মিলের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:০১
Share:

ইন্ডিয়া জুট মিলের শ্রমিক মহল্লা এ বার দীপাবলিতে নিষ্প্রভ থাকছে। রাজ্য প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সোমবার সমস্যার সমাধানসূত্র বেরোয়নি। তবে আগামী সোমবার কলকাতায় শ্রমমন্ত্রীর ঘরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। অর্থাত্‌, কালী পুজোর আগে ইন্ডিয়া জুট মিল খোলার সম্ভাবনা প্রায় নেই। মিল কর্তৃপক্ষের নামে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং শ্রমিকদের উপর জুলুমের অভিযোগে শ্রম দফতরে স্মারকলিপি দেয় মিলের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। মিলের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

Advertisement

শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তথা তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “সোমবার শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক মিল কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন। আশা করছি সমস্যা মিটে যাবে।” মিলে গোলমালের দায় তপনবাবু সিটু-র উপর চাপিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “মিল বন্ধ করতেই সিটু গোলমাল পাকিয়েছে। আমরা উত্‌পাদন দ্রুত চালু করার চেষ্টা করছি।” বর্ষীয়ান সিটু নেতা সুনীল সরকার বলেন, “সবেতেই ওরা বামেদের ভুত দেখছেন। ওখানে মালিক পক্ষের সঙ্গে সাধারণ শ্রমিকদের গোলমাল হয়।”

শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার মিলের চিফ পার্সোনেল ম্যানেজার দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ডেপুটি শ্রম কমিশনার অমল মজুমদার। অমলবাবু দ্রুত মিল খুলতে মিল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। তবে, তাঁরা এ ব্যাপারে কোনও আশ্বাস দেননি। মিলের এক কর্তা বলেন, “কিছু শ্রমিক ওখানে মারমুখী হয়ে ওঠেন। দুষ্কৃতীরা মিশে ছিলেন তাদের সঙ্গে। গুণ্ডামির জন্যই মিল বন্ধ করতে হয়েছে। খোলার পরিস্থিতি নেই।”

Advertisement

উত্‌সবের ভরা মরসুমে কাজ হারিয়ে সমস্যায় পড়েছেন মিলের কয়েক হাজার শ্রমিক। দ্রুত উত্‌পাদন চালুর দাবি তুলেছেন তাঁরা। শ্রমিকদের বক্তব্য, শ্রমিকদের ‘অনৈতিক’ ভাবে অতিরিক্ত কাজ করানো হচ্ছে। এ দিন সকালে ৮ শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি ডেপুটি শ্রম কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেন। অবিলম্বে কারখানা খোলার ব্যবস্থা করার দাবি জানানোর পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানানো হয়।

রবিবার মিলের তাঁতঘর বিভাগের কিছু শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন মিল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের তরফে জানানো হয়, ওই শ্রমিকেরা ইচ্ছে করে কম উত্‌পাদন করায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের ওই নির্দেশের প্রতিবাদ করে আন্দোলনে নামেন অন্যরা। তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। কর্তৃপক্ষের লোককে ঘেরাও করা হয়। সেই সময় শ্রমিকরা মারমুখী হয়ে ওঠেন। তাঁতঘরের মাকু-সহ নানা জিনিস ছোড়া হয় কর্তৃপক্ষের লোকজনকে লক্ষ করে। ম্যানেজারদের গায়ে হাত তোলা হয়। কাজকর্ম শিকেয় ওঠে। পুলিশপরিস্থিতি সামলায়। তপন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ম্যানেজারকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন