হাইকোর্টের নির্দেশ মতো নিম্ন আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন করলেন পাড়ুই-কাণ্ডে আত্মসমর্পণকারী দুই অভিযুক্ত ভগীরথ ঘোষ ও সুব্রত রায়। অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী নুরুল আলম বলেন, “সোমবার সিউড়ি আদালতে এই আবেদন জানানো হয়েছে। কবে গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কাল বুধবার শুনানি হবে। ওই দিন দুই অভিযুক্ত ছাড়াও ঘটনার তদন্তকারী অফিসার (সিটের) তীর্থঙ্কর সান্যালকে কেস ডায়েরি নিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।”
গত বছর ২১ জুলাই পঞ্চায়েত ভোটের আগের রাতে বীরভূমের পাড়ুই থানার বাঁধনবগ্রামে নিজের বাড়িতে খুন হন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী হৃদয় ঘোষের বৃদ্ধ বাবা সাগরচন্দ্র ঘোষ। ওই ঘটনায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে নিহতের পুত্রবধূ শিবানী ঘোষ খুনের অভিযোগ করেন। তালিকায় উপরের দিকে নাম রয়েছে সুব্রত ও ভগীরথের। সাগরবাবুকে যে চার জন গুলি করে বলে শিবানীদেবীর অভিযোগ, তাঁদেরও অন্যতম সুব্রত-ভগীরথ।
প্রায় এক বছর আত্মগোপনের পরে এ বছরের ২৪ এপ্রিল সিউড়ি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ভগীরথ। সুব্রত আত্মসমর্পণ করেন ২১ মে। পরে পাড়ুই-কাণ্ডের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট আদালতে জানায়, ওই দু’জন দোষ কবুল করেছেন। কিন্তু পুলিশের ওই বক্তব্য মেনে নিতে না পেরে ভগীরথ ও সুব্রত সিউড়ির মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন জানান। নিম্ন আদালত জানায়, পুলিশ বিচারকের কাছে অভিযুক্তদের গোপন জবানবন্দি দেওয়ানোর আবেদন জানায়নি। তাই অভিযুক্তদের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। তখন অভিযুক্তরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী নুরুল আলম জানান, গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট তাঁদের আর্জি মেনে নিম্ন আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন করতে বলেন। সেই মতো এ দিন সিউড়ি আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।
হৃদয় ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “খুনিরা পালিয়েছিল। আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। ওঁদের গোপন জবানবন্দি প্রহসন। গল্প ফেঁদে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য এত দিন সময় নিয়েছে। এর কোনও ভিত্তি নেই।”