Russia Ukraine War

জ়াপোরিজিয়ায় সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র হানা, নিহত ১৭, বাড়ছে পরমাণু বিপর্যয়ের ভয়

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ন’দিনে ৬০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন এ শহরে। বেশির ভাগ আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত। সর্বশেষ হামলাটির প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, আবাসনগুলিতে নিশানা করা হয়নি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ০৭:১৯
Share:

জ়াপোরিজিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স।

দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের শহর জ়াপোরিজিয়ায় ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল রাশিয়া। সাত-সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ল শহরে। ১৭ জন নিহত। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, অগুণতি মানুষ আক্রান্ত। বেশ কিছু আবাসন ভেঙে পড়েছে বিস্ফোরণে। গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা। প্রকাশ্যে এসেছে আজ।

Advertisement

জ়াপোরিজিয়া অঞ্চলটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেলেও মূল শহরটি ইউক্রেনের হাতে। গত মাসে গণভোট করে আনুষ্ঠানিক ভাবে জ়াপোরিজিয়া অঞ্চলকে তাদের অংশ বলে ঘোষণা করেছে ক্রেমলিন। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জ ও ইউরোপ-আমেরিকা রাশিয়ার দাবিকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাতে অবশ্য বিশেষ চিন্তিত নয় মস্কো। পুরো অঞ্চল দখল করতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জ়াপোরিজিয়া শহরে টানা হামলা চালাচ্ছে তারা।

জ়াপোরিজিয়া শহর থেকে মাত্র ৫২ কিলোমিটার দূরত্বে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু কেন্দ্রটি অবস্থিত। একটানা রুশ হামলায় মাঝেমাঝেই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে কেন্দ্রটি। এটিও রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। যদিও পরমাণু চুল্লিগুলি চালু রেখেছে কেন্দ্রের ইউক্রেনীয় কর্মীরা। যে কোনও মুহূর্তে পরমাণু বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে সাবধান করছেন তাঁরা। যদিও জ়াপোরিজিয়া শহরে হামলা থামছে না।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ন’দিনে ৬০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন এ শহরে। বেশির ভাগ আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত। সর্বশেষ হামলাটির প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, আবাসনগুলিতে নিশানা করা হয়নি। কিন্তু লক্ষ্যহীন ভাবে বোমা ফেলা হয়েছে। ১৭ জন নিহতের মধ্যে শিশুও রয়েছে। তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছিল একেবারে শহরের মধ্যভাগে। দক্ষিণে যে সেনাঘাঁটি রয়েছে, তার থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে। মূল সড়কের ধারে একটি পাঁচ তলা বাড়ি ছিল। সেটি সম্পূর্ণ মাটিতে মিশে গিয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি এ দিনও জানিয়েছেন, ওরা ‘ক্ষমার অযোগ্য’। তাঁর কথায়, ‘‘এত নিষ্ঠুর ওরা। নৃশংস এবং সন্ত্রাসবাদী। যাঁর নির্দেশে এ সব হচ্ছে এবং যাঁরা এই কাজ সম্পন্ন করছেন, সকলকে এত মানুষের মৃত্যুর দায়ভার নিতে হবে।’’

বৃহস্পতিবারের ঘটনা। কিন্তু এখনও শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। মানুষ রণক্লান্ত। লোকাভাবও প্রবল। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ৮ জনকে ভগ্নাবশেষের নীচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

ভোরবেলার ঘটনা। হামলার সময়ে অনেকেই ঘুমিয়ে ছিলেন। প্রাণে বেঁচে যাওয়া অনেকেই জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দে তাঁদের ঘুম ভেঙেছিল। স্থানীয় বাসিন্দা ক্যাটরিনা ইভানোভা জানিয়েছেন, তাঁদের পুরো বাড়ি ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল। পরিবারের সকলকে নিয়ে তিনি বাথরুমে ঢুকে যান। তার পর কোনও মতে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। ইভানোভা জানান, রাস্তায় বেরোতেই এক প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা হয়। তিনি আর্তনাদ করতে করতে জানান, তাঁরা স্বামী মারা গিয়েছেন। ওই অঞ্চলের আর এক বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সিলুদমিলা জানান, বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনে তিনি দ্রুত বাচ্চাদের ঘুম থেকে তোলেন। তার পর নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন। লুদমিলার বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি রোজ রাত হলেই গোলাবর্ষণ শুরু হচ্ছে। কাল ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি ফের উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ক্রমশ পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। বিপর্যয় ঘটল বলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement