ছবি: এএফপি।
ফিরে আসছে ১৮ বছর আগের আতঙ্ক। এই মরসুমে চিনে অসংখ্য নিউমোনিয়া আক্রান্ত কাবু হয়েছেন একটি নতুন করোনা ভাইরাসের আক্রমণে, বলছেন চিকিৎসক ও গবেষকেরা। ২০০২-’০৩ সালে ৮০০-রও বেশি মৃত্যুর কারণ ‘সার্স’ ভাইরাসের তুতো-ভাই এই নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস।
নিউমোনিয়ার মতো শ্বাসজনিত রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসটি প্রথম ধরা পড়ে গত ডিসেম্বরে, চিনের উহান শহরে। তাই একে ‘উহান ভাইরাস’ নামে চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার পর্যন্ত এই ভাইরাস-জনিত রোগে চিনে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত তিনশোরও বেশি। উহান যে প্রদেশে, সেই হুবেই ছাড়া এই ভাইরাসের হদিস মিলেছে শেনঝেন প্রদেশ ও সাংহাই শহরে।
‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম’ সৃষ্টিকারী সার্স ভাইরাসের সঙ্গে এই ‘উহান ভাইরাস’-এর অনেক মিল। ফলে কখন তা মারণ রোগের চেহারা নেবে, সেই আতঙ্কে ভুগছেন চিকিৎসকেরা। সার্সে আক্রান্তদের মধ্যে ১০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছিল। দক্ষিণ কোরিয়া, তাইল্যান্ড ও জাপানেও অস্তিত্ব মিলেছে এই ভাইরাসের। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভারত, আমেরিকা-সহ বেশ কয়েকটি দেশের বিমানবন্দরেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
সার্সের মতো উহান ভাইরাসের সংক্রমণও প্রথমে হয় পশুদের মধ্যে। পরে তা মানুষের মধ্যে ছড়ায়। কাল চিনের এক দল গবেষক জানিয়েছেন, এ বার এই ভাইরাসের মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের নজিরও মিলছে। ফলে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
সামনেই চিনা নববর্ষ। এই সময়ে চিনে বেড়াতে যান দেশবিদেশের পর্যটকেরা। দেশে ফেরেন বহু চিনা অভিবাসীও। আবার ছুটির মরসুমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বেড়াতে যান অনেক চিনা। ফলে আগামী কয়েক দিনে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলবার আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ ঘোষণা করেছে, আমেরিকায় এক জনের উহান ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। তিনি চিন থেকে এ দিনই আমেরিকা ফিরেছেন বলে খবর। অনেক ভারতীয় ছাত্রছাত্রী উহানে পড়াশোনা করে। ফলে সতর্ক দিল্লিও।
ভারতে করোনা ভাইরাস-হানা ঠেকাতে দেশের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই বিমানবন্দরে বিশেষ ‘থার্মাল স্ক্রিনিং’ যন্ত্র বসানো হয়েছে। চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, কোচিতেও তার প্রস্তুতি চলছে।