বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় পাওয়া গেল রাজসাক্ষী। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরে সে দেশের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই মামলায় হাসিনা-সহ তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।
গত বছরের জুলাইয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনা ছাড়াও অন্য দুই অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের প্রাক্তন আইডিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান, উভয়কেই ‘পলাতক’ ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশে। অপর অভিযুক্ত মামুনকে বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হয়। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, আদালতে ‘দোষ স্বীকার’ করছেন পুলিশের প্রাক্তন আইজিপি। অপরাধের বিষয়ে তথ্য দিয়ে ট্রাইবুনালকে সাহায্য করার কথাও বলেছেন তিনি। পরে মুখ্য সরকারি আইনজীবী তাজুল ইসলাম জানান, মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হয়েছেন।
বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’ অনুসারে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশের ফলে এই প্রথম বারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসিনাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হল। বস্তুত, এই মামলাটি ছাড়াও বাংলাদেশে আরও দু’টি মামলা চলছে আওয়ামী লীগের নেত্রীর বিরুদ্ধে। একটি মামলায় আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনকালের গুম-খুনের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে হাসিনাকে। অন্যটি ঢাকার মতিঝিলে হেফাজতে ইসলাম নামে সংগঠনের সমাবেশে হত্যকাণ্ডের মামলা।
সম্প্রতি ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’-র অন্তর্তদন্তেও হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্রবিদ্রোহ দমন করতে হাসিনাই প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবিতে ফের সরব হয়েছে ঢাকা। সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম বুধবার এ বিষয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্টও করেন।