খুন-জখম-মাদক পাচার, এ সবেই কুখ্যাতি তাদের। দুনিয়া জুড়েই শিউরে ওঠা সব কাণ্ডকারখানার নজির গড়েছে এই মহিলা অপরাধীরা। এক ঝলকে জেনে নিন অপরাধের জগতের এই কুখ্যাত মহিলাদের কাহিনি।
আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত মহিলা অপরাধীর নাম বোধহয় কেট বার্কার ওরফে মা বার্কার। অপহরণ, ডাকাতি, খুন-সহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তার নাম। নিজের দুই ছেলেকে সঙ্গী করে গত শতকের তিরিশের দশকের গোড়ায় মার্কিন মুলুকে ত্রাসের সঞ্চার করেছিল তার ‘বার্কার গ্যাং’। ১৯৩৫-এ ফ্লোরিডার বাড়িতে মা বার্কারকে গুলি করে মারে এফবিআই।
২০০৮-এ ন’বছরের জেল হয়েছিল চেক প্রজাতন্ত্রের নাগরিক ক্লারা মোরোভার। ৮ ও ১০ বছরের দুই ছেলের মা ক্লারা তার আত্মীয়দের সঙ্গে নিজের বাচ্চাদের বন্দি বানিয়ে মারধর করা থেকে শুরু করে যৌন অত্যাচার, সবই চালাত। এমনকি, ৮ বছরের ছেলে অন্দ্রেজকে জোর করে নিজের মাংস খেতেও বাধ্য করেছিল ৩১ বছরের ক্লারা।
মেক্সিকোর কুখ্যাত খুনিদের মধ্যে এক কথায় উঠে আসে হুয়ানা বারাজার নাম। পেশাদার কুস্তিগীর হুয়ানা ৪২ থেকে ৪৮ বছরের বহু মহিলাকে খুন করেছিল। তবে এর সঠিক সংখ্যা নিয়ে মেক্সিকো প্রশাসন এখনও অন্ধকারে। অনেকের মতে, তা সংখ্যাটা ২৪ বা ৪৯ হতে পারে। ২০০৬-এ হুয়ানার গ্রেফতারির পর তার ৭৫৯ বছরের কারাবাসের সাজা শোনায় আদালত।
কলম্বিয়ায় মাদক পাচারকারীদের মধ্যে সামনের সারিতে থাকবে গ্রিসেল্ডা ব্লাঙ্কো। কোকেন গডমাদার বা ব্ল্যাক উইডো, এমন সব নামেই কুখ্যাতি ছিল তার। কলম্বিয়া থেকে নিউ ইয়র্কে মাদক পাচার করা ছাড়াও ২০০টি খুনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তার নাম। ২০১২-তে ৬৯ বছরের গ্রিসেল্ডোকে গুলি করে মারে দুষ্কৃতীরা।
আঠারো শতকের সাতের দশকে ইংল্যান্ডের ব্রাইটনে বহু মানুষ চকোলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তদন্তে জানা যায়, চকোলেট কিনে তাতে কীটনাশক মিশিয়ে ফের তা দোকানে ফিরিয়ে দিত ক্রিস্টিনা এডমুন্ডস। তা খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন ক্রেতারা। মৃত্যু হয় এক শিশুরও। গ্রেফতারির পর আজীবন জেল হয় ক্রিস্টিনার। ১৯০৭-এ জেলেই মারা যায় সে।
গত শতকের চারের দশকে একশোরও বেশি অনাথ শিশুকে খুন করেছিল মিয়ুকি ইশিকাওয়া। জাপানের কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারদের অন্যতম মিয়ুকি তার অপরাধের সঙ্গী করেছিল নিজের স্বামীকেও। শুনানির সময় ওই অনাথ শিশুদের ছেড়ে যাওয়ার জন্য তার মা-বাবাকেই দায়ী করেছিল মিয়ুকি। তবে তার অপরাধের জন্য মাত্র ৪ বছরের জেল হয় মিয়ুকির।
১৯৮৯ থেকে ১৯৯০-এর মধ্যে সাত জনকে খুন করেছিল পেশায় যৌনকর্মী আইলিন উরনোস। আমেরিকার এই সিরিয়াল কিলারের জীবন কাহিনি জায়গা পেয়েছে তথ্যচিত্র, বই, টেলিভিশন সিরিজ এবং অস্কার জয়ী ফিল্মেও। ২০০২-এ বিষাক্ত ইনঞ্জেকশনের মাধ্যমে ৪৬ বছরের আইলিনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করা হয়।