Afghanistan

Afghanistan: মুখ ফিরিয়ে থাকবেন না, আমার সুন্দর দেশটাকে বাঁচান, আকুল আবেদন আফগান মহিলা পরিচালকের

সাহারার বক্তব্য, ‘আমি এই পৃথিবীর নিয়মনীতি বুঝি না। এই নীরবতাও বুঝি না আমি। লড়তে প্রস্তুত আমি। কিন্তু একার পক্ষে সম্ভব নয়।’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২১ ১৮:০৫
Share:

সাহারা করিমি। ছবি: সংগৃহীত।

ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে ২০ বছরে। তাই আফগানিস্তান থেকে হাত তুলে নিয়েছে আমেরিকা। আপাতত নীরব দর্শক রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ অন্য দেশগুলিও। তাই বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়েই এ বার তালিবান অভ্যুত্থান নিয়ে সরব হলেন আফগানিস্তানের মহিলা চিত্র পরিচালক সাহারা করিমি। তাবড় রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রনেতাদের নীরবতা ভেঙে আফগানবাসীর পাশে দাঁড়াতে কাতর আর্জি জানালেন তিনি।

Advertisement

আশঙ্কা সত্যি করে রবিবার কাবুলের দখল নিয়েছে তালিবান। দেশের চার কোটি মানুষকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনিও। তার পর থেকেই ভয়াবহ ছবি উঠে আসছে আফগানিস্তান থেকে। বিমানের চাকায় ঝুলে পালাতে গিয়ে মাঝ আকাশ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছেন আফগান ফিল্ম অর্গানাইজেশন-এর প্রথম মহিলা চেয়ারপার্সন সাহারা। তিনি লিখেছেন, ‘ভারাক্রান্ত মনে অনেক আশা নিয়ে আপনাদের চিঠি লিখছি। আমাদের সুন্দর দেশটাকে, দেশের মানুষকে এবং শিল্প সচেতন মানুষকে তালিবানের হাত থেকে বাঁচান। গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক প্রদেশ দখল করে নিয়েছে তালিবান। কতশত শিশুকে অপহরণ করেছে। বিয়ের বাজারে ছোট ছোট মেয়েদের বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।’

Advertisement

২০ বছর ধরে যা তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন, তা ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি সাহারার। —ফাইল চিত্র।

কাবুলে সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তালিবান। কিন্তু তাদের হাতে আফগানিস্তান মোটেই সুরক্ষিত নয় বলে দাবি করেছেন সাহারা। তাঁর কথায়, ‘আফগানিস্তানে মানবাধিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অথচ নীরব গোটা দুনিয়া। আমরা এই নীরবতায় অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছি। কিন্তু এ ভাবে আমাদের একা ফেলে চলে যাওয়াটা অন্যায়। গত ২০ বছরে যা কিছু অর্জন করেছি, সব ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে। আমি এবং আমার মতো শিল্প সচেতন মানুষ এখন ওদের হিটলিস্টে।’

বিগত কয়েক দিন ধরেই আফগানিস্তান থেকে তালিবানের হাতে মহিলাদের নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসছে। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাহারা লেখেন, ‘তালিবান শাসনের সময় স্কুলে ছাত্রীদের সংখ্যা ছিল শূন্য। গত কয়েক বছরে স্কুলে মেয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ লক্ষে। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাটের স্কুলগুলিতে মোট পড়ুয়ার ৫০ শতাংশই মেয়ে। কত পরিশ্রমের পর এই কৃতিত্ব অর্জন করেছি আমরা, তা কিন্তু জানে না বিশ্ব। ইতিমধ্যেই ২০ লক্ষ মেয়েকে স্কুল ছাড়তে বাধ্য করেছে তালিবান।’

মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাহারা। —ফাইল চিত্র।

সাহারার কাতর আর্জি, ‘আমি এই পৃথিবীর নিয়মনীতি বুঝি না। এই নীরবতাও বুঝি না আমি। নিজের দেশের জন্য লড়তে প্রস্তুত আমি। কিন্তু আমার একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। আমাদের সঙ্গে যা ঘটছে, সে দিকে নজর দিতেই হবে। কিছু দিনের মধ্যেই হয়তো আর ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারব না আমরা। অন্য ভাবে যোগাযোগের রাস্তাও হয়তো থাকবে না। হয়তো আর কয়েকটা দিনই আছে আমাদের হাতে। তার আগে বিশ্বের কাছে আমাদের আর্তি পৌঁছনো দরকার।’

সাহারার এই আর্তিভরা চিঠি ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপও সেটি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। সাহারার আর্তি যত দ্রুত সম্ভব ছড়িয়ে দিতে সকলকে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন