আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের সীমান্ত। ছবি: এএফপি।
পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ করল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। তিন দিন ধরে চেষ্টা করেও আফগানিস্তানে যাওয়ার ভিসা পাচ্ছেন না পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। ভিসা দেওয়া হচ্ছে না পাক গুপ্তচর সংস্থার প্রধান আসিম মুনির এবং অপর দুই সেনাকর্তাকেও। কাবুলের তালিবান প্রশাসনের সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে আফগান সংবাদমাধ্যম ‘টোলো নিউজ়’।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সেনা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। তার পরে প্রত্যাঘাত করে তালিবান বাহিনীও। এই উত্তেজনার মাঝে ভারতে সফররত তালিবান বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ইসলামাবাদকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ না হলে অন্য পথও খোলা রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলকে আফগানিস্তান যেতে ভিসা দিতে চাইছে তালিবান সরকার। গত তিন দিনে একাধিক বার তাঁদের ভিসার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
‘টোলো নিউজ়’ সূত্রে খবর, গত তিন দিন ধরে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী, গুপ্তচর সংস্থার প্রধান এবং দুই সেনা জেনারেল একাধিক বার আফগানিস্তান সফরের জন্য ভিসার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু কাবুল প্রতি বারই তা খারিজ করে দিচ্ছে। তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদও জানিয়েছেন, উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধিদল পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে আসতে চাইছে। তবে সম্প্রতি পাকিস্তান বাহিনী আফগানিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। সেই কারণে তাঁদের ওই অনুরোধ বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। যদিও পাকিস্তানে ওই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলে কারা রয়েছেন, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তালিবান সরকারের মুখপাত্র।
মুজাহিদ বলেন, “তারা (পাকিস্তান) সে দেশের উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের আফগানিস্তানে আসার জন্য অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু আকাশসীমা লঙ্ঘনের কারণে, সফরের অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং তাদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।” যদিও এ বিষয়ে পাকিস্তানের তরফে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
এর আগে গত শনিবার পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে ইতিমধ্যে একটি বিবৃতি জারি করেছিল কাবুল। আফগান তালিবানের মুখপাত্র মুজাহিদ ওই বিবৃতিতে বলেছিলেন, “আইএসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যেরা পাকিস্তানের মাটিতে লুকিয়ে আছে। পাকিস্তানের উচিত তাদের দেশ থেকে বার করে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া। এই আইএস গোষ্ঠী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য আশঙ্কার কারণ। আফগানিস্তানের জন্যেও তাই। যারা অশান্তি করে, তাদের সকলকে আমরা বার করে দিয়েছি। কিন্তু তাদের জন্য পাখতুনখোয়ায় নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানে ঢোকানো হচ্ছে।’’