হামাসের হাতে পণবন্দি নেপালি যুবকের (ইনসেটে) মৃত্যু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ইজ়রায়েলে পড়তে গিয়ে হামাসের হাতে বন্দি হয়েছিলেন নেপালের যুবক বিপিন জোশী। জীবিত অবস্থায় দেশে ফেরা হল না তাঁর। সোমবার ইজ়রায়েল-হামাসের বন্দি প্রত্যর্পণের সময় ২০ জন পণবন্দিকে জীবিত অবস্থায় ইজ়রায়েলের হাতে তুলে দেয় হামাস। চার পণবন্দিরও দেহ ফেরানো হয়। সেই তালিকায় ছিলেন বিপিনও। চার জনেরই মৃত্যু হয় হামাসের হাতে বন্দি থাকা অবস্থায়।
ইজ়রায়েলের নেপালের রাষ্ট্রদূত ধনপ্রসাদ পণ্ডিত নেপালি সাংবাদমাধ্যম ‘রিপাবলিকা’র কাছে বিপিনের মৃত্যুর খবর সুনিশ্চিত করেছেন। সোমবার রাতে ইজ়রায়েলের রাজধানী তেল আভিভে নিয়ে আসা হয় বিপিনের দেহ। তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে নেপাল দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে। ইজ়রায়েলি সেনার মুখপাত্র এফি ডাফরিন জানিয়েছেন, চার পণবন্দির দেহ তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছে হামাস।
জানা গিয়েছে, নেপালের একটি ছোট শহর থেকে ২০২৩ সালে গাজ়া সীমান্তলাগোয়া ইজ়রায়েলের কিবুৎজ় অ্যালুমিমে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন বিপিন। সেখানে আরও ১৬ পড়ুয়ার সঙ্গে থাকতেন তিনি। কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে পড়াশোনা এবং গবেষণা করছিলেন তিনি। ইজ়রায়েলে কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য খুব কম ছাত্রই সুযোগ পান। বিপিনের ভাগ্যে সেই সুযোগ জুটেছিল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েল সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়ে হামলা চালায় হামাস। সেই সময় গাজ়া সীমান্তলাগোয়া ওই শহরের কৃষি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ছিলেন বিপিনেরা। হামলার খবর পেয়ে তাঁরা একটি ‘বম্ব শেল্টার’-এ লুকিয়ে পড়েন। হামাসবাহিনী সেই আশ্রয়শিবিরে গ্রেনেড হামলা চালায়। একটি গ্রেনেড বিস্ফোরণে বহু পড়ুয়া আহত হন। পরে ফের একটি গ্রেনেড হামলাকারীরা ছুড়ে মারেন। কিন্তু বিস্ফোরণের আগেই বিপিন সেই গ্রেনেড বাইরে ছুড়ে ফেলেন। ফলে অনেকের জীবন বেঁচে যায়। তবে বাকি পড়ুয়াদের জীবন বাঁচিয়ে নিজে হামাসের হাতে ধরা পড়েন বিপিন। তাঁকে গাজ়ায় নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। তার পর আর তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি, যোগাযোগও করা যায়নি। তবে ইজ়রায়েলি সেনা বিপিনের একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল বিপিনকে আহত অবস্থায় শিফার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার পর দু’বছর কেটে গিয়েছে। ইজ়রায়েল-হামাসের সংঘর্ষে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে পণবন্দিদেরও। দু’বছর পর যখন দু’পক্ষের মধ্যে শান্তিচুক্তি এবং বন্দি প্রত্যর্পণের বিষয়টি পাকাপাকি অবস্থানে পৌঁছোল, লাশ ফিরল বিপিনের।