আফগানিস্তানে আমেরিকার তৈরি বিমানঘাঁটি ফেরত চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তানের বিমানঘাঁটি প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে দিল তালিবান সরকার। আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সবরকম ভাবে রক্ষা করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে তারা। বস্তুত, আফগানিস্তানের বাগরামে একটি বিমানঘাঁটি তৈরি করেছিল আমেরিকা। ২০২১ সালে আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার পর থেকেও ওই ঘাঁটিটি চলে যায় তালিবানের দখলে। এখন ওই বিমানঘাঁটি আবার ফেরত পেতে চাইছেন ট্রাম্প।
সংবাদ সংস্থা এপি অনুসারে, রবিবার বিকেলে এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। আমেরিকাকে ‘বাস্তবসম্মত’ এবং ‘যুক্তিগ্রাহ্য’ নীতিতে চলার পরামর্শ দিয়েছে তারা। সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে মুজাহিদ লেখেন, আফগানিস্তানের বিদেশনীতি অর্থনীতি-ভিত্তিক। পারস্পরিক স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে একটি গঠনমূলক কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করতে চায় আফগানিস্তান।
তালিবান সরকারের মুখপাত্রের বক্তব্য, আমেরিকার সঙ্গে প্রতিটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় ধারাবাহিক ভাবে বোঝানো হয়েছে যে আফগানিস্তানের স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে দোহা চুক্তির কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মুজাহিদ। তাঁর বক্তব্য, “দোহা চুক্তির আওতায় আমেরিকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কোনও বলপ্রয়োগ করবে না। তারা আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।” তালিবান সরকারের মুখপাত্রের বক্তব্য, আমেরিকা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পালন করতে হবে হোয়াইট হাউসকে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার পর আফগানিস্তানে একটি বিমানঘাঁটি তৈরি করেছিল আমেরিকা। বাগরাম বিমানঘাঁটিটি ২০০১ সাল থেকেই মার্কিন সেনা ব্যবহার করত। প্রায় দু’দশক পরে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল তৎকালীন জো বাইডেন প্রশাসন। তখন তালিবান ওই মার্কিন ঘাঁটিও দখল করে নেয়। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্প ওই ঘাঁটিটি ফেরত পেতে চাইছেন।
শনিবার ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘বাগরাম বিমানঘাঁটি যারা বানিয়েছে, আফগানিস্তান যদি সেটা তাদের ফেরত না দেয়, তবে খুব খারাপ হবে।’’ এর পর হোয়াইট হাউসের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এখন আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা ওই বিমানঘাঁটি ফেরত চাই। খুব শীঘ্রই ফেরত চাই। যদি ওরা সেটা না করে, আমি কী করব সেটা আপনারা সকলে দেখতে পাবেন।’’ ট্রাম্পের ওই দাবির পরে এ বার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল তালিবান সরকারও।