প্রস্তুত আফগান সেনা! ছবি: রয়টার্স
জবাব দেবে আফগানিস্তানও। পাকিস্তানের হামলার পরে এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছে আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসন। প্রশাসনের এক কর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। ওই কর্তা আরও জানিয়েছেন, পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে, পাকতিকা প্রদেশের তিন জায়গায় বোমা ফেলেছে। আফগানিস্তানের হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেই বিমান হানায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। হুঁশিয়ারি দিলেও আফগানিস্তান জানিয়ে দিয়েছে, শনিবার দোহায় পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি-বৈঠকে উপস্থিত থাকবে তারা।
আফগানিস্তান প্রশাসনের মুখপাত্র জ়াবিহুল্লা মুজাহিদ বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতিমতো শনিবার দোহায় পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হবে।’’ ইতিমধ্যে সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ ইয়াকুবের নেতৃত্বে আফগান সরকারের একটি প্রতিনিধিদল দোহার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলে জানান ওই মুখপাত্র। সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ় সূত্রের খবর, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ এবং গোয়েন্দা প্রধান শনিবার দোহার বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন।
আফগানিস্তানের হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে পাকিস্তানি হামলায় নিহত ১০ জনের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। আরও ১২ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন আফগানিস্তানের তিন ক্রিকেটারও। নিহতেরা হলেন কবীর, শিবঘাতুল্লা এবং হারুন। তাঁরা পাকতিকা প্রদেশে খেলতে গিয়েছিলেন। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে এএফপি। ক্রিকেট বোর্ড আরও জানিয়েছে, তিন দেশের টি-২০ সিরিজে খেলবে না তাদের দল। পরের মাসে শুরু হওয়ার কথা সেই সিরিজ়।
পাকতিকায় হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে পাকিস্তান। এএফপিকে সে দেশের এক নিরাপত্তা আধিকারিক জানান, হাফিজ় গুল বাহাদুর গোষ্ঠীকে নিশানা করে ওই হামলা চালানো হয়েছিল। ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ রয়েছে তেহরিক-এ-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি)। ইসলামাবাদের অভিযোগ, এই হাফিজ় গুল বাহাদুর গোষ্ঠী উত্তর ওয়াজ়িরিস্তানে সেনা ছাউনিতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ এবং বন্দুক হামলা চালিয়েছিলেন। তাতে নিহত হন সাত জন জওয়ান।
গত এক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। বুধবার ৪৮ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছিল দুই দেশ। তার মেয়াদ শেষ হয়েছে শুক্রবার। তার পরেই রাতে পাকিস্তান হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সংঘাতের আবহে পাকিস্তানে বসবাসকারী আফগানদের দেশ ছাড়তে বলেছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার এই বিষয়ে সুর চড়ান পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সব আফগানকে তাঁদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে হবে।” কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই বলেও জানান তিনি।