ডোকলাম সীমান্ত।- সংগৃহীত।
ডোকলাম অতীত বোঝাতে আরও কাছাকাছি এল ভারত ও চিন।
আরও সহযোগিতা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যেকার সীমান্ত বিরোধ মেটাতে শনিবার বৈঠক হল বেজিংয়ে। টানা ৭২ দিনের ডোকলাম সমস্যা মেটার পর এই প্রথম আনোচনায় বসল দুই প্রতিবেশী দেশ।
বেজিংয়ে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে। ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের পূর্ব এশিয়া বিভাগের যুগ্ম সচিব প্রণয় বর্মা। আর চিনা প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এশিয়া সংক্রান্ত বিভাগের অধিকর্তা শিয়াও ছিয়াং।
আরও পড়ুন- আফ্রিকার রাজা বিপন্ন ট্রাম্পের আইনে
আরও পড়ুন- প্রকাশ্যে মুগাবে, চাইছে না দলই
ভারত ও চিনের মধ্যেকার নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) যে ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা নিয়ে বিরোধ রয়েছে, তা আলাপ-আলোচনায় মেটাতে ২০১২ সালে গঠিত হয় একটি যৌথ কমিটি। যার নাম- ‘ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালটেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন অফ ইন্ডিয়া-চায়না বর্ডার অ্যাফেয়ার্স (ডব্লিউএমসিসি)’। সীমান্ত সমস্যা মেটাতে এটা ছিল কমিটির দশম বৈঠক। ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে অনেক দিন ধরেই দাবি করে আসছে বেজিং। পক্ষান্তরে, দিল্লির বক্তব্য, ’৬২-র যুদ্ধের পর ভারতের কাছ থেকে আকসাই চিন কেড়ে নিয়েছিল বেজিং।
বেজিংয়ে ভারতীয় দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিনের বৈঠক হয়েছে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে। কী ভাবে দু’দেশ নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা ও বোঝাপড়া আরও বাড়াতে পারে, গোয়েন্দা তথ্য দেওয়ানেওয়া সহ পারস্পরিক যোগাযোগ যাতে আরও বাড়ানো যায়, এ দিনের বৈঠকে তার ওপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং দ্বিতীয় বার চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর সীমান্ত সমস্যা মেটাতে এই প্রথম দিল্লির সঙ্গে বৈঠকে বসল বেজিং। পারস্পরিক সীমান্ত সমস্যার জট খুলতে ডিসেম্বরেই ভারত, রাশিয়া ও চিনের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক (আরআইসি) হবে দিল্লিতে। সেই সূত্রে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াঙ ই’র দিল্লিতে আসার আগে এ দিনের ভারত-চিন সীমান্ত বৈঠককে যথেষ্টই ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বেজিংয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ওই সময় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সহ ভারতের কয়েক জন শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠকে বসতে পারেন চিনা বিদেশমন্ত্রী। সেই বৈঠকে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) ও কট্টর সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহার নিয়ে আলোচনা হতে পারে। মূলত বেজিংয়ের ভেটো দেওয়ার জন্যই মাসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি রাষ্ট্রপুঞ্জে।
সীমান্ত বিরোধ মেটাতে ভারত ও চিনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও ইয়াঙ জিয়েশির নেতৃত্বে দু’দেশের প্রতিনিধিদলেরও একটি বৈঠক ডিসেম্বের হওয়ার কথা দিল্লিতে। তবে সেই বৈঠকের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি।