(বাঁদিকে) শাহবাজ শরিফ, মার্কো রুবিয়ো (ডানদিকে)। —ফাইল চিত্র।
পহেলগাঁওয়ে হত্যাকাণ্ডের পরে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনা প্রশমনে উদ্যোগী হল আমেরিকা। মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও বুধবার রাতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি সংঘাতমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাক জঙ্গিদের হামলায় ২৫ জন পর্যটক-সহ ২৬ জনের মৃত্যুর পরেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদকে সংঘাতের পরিবর্তে সমস্যার ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ খুঁজতে বলেছিল। কিন্তু তার পরেই কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্তরে একাধিক পদক্ষেপ করেছে দু’দেশ। নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) টানা এক সপ্তাহ ধরে চলছে গুলির লড়াই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় সেনাকে যে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণের ছাড়পত্র দিয়েছেন। এই আবহে ইসলামাবাদের তরফে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য ওয়াশিংটনে বার্তা পাঠানো হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে সক্রিয় হয়েছেন রুবিয়ো।
মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানিয়েছেন, জয়শঙ্করের সঙ্গে কথোপকথনের সময় রুবিয়ো পহেলগাঁওয়ে প্রাণহানির জন্য গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন এবং জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, জয়শঙ্করকে সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা করার এবং দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মার্কিন বিদেশ দফতরের ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, ‘‘দু’দেশের মধ্যে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করুক, এবং দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করুক।’’
পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে, মার্কিন বিদেশ সচিবের কাছে পহেলগাঁও কাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় কোনও পক্ষের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হলে ইসলামাবাদ তাতে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে শাহবাজ ফোনে রুবিয়োকে জানিয়েছেন, পহেলগাঁও সন্ত্রাসের সঙ্গে পাক সরকারের কোনও যোগ নেই। পাক প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, পহেলগাঁও কাণ্ডের পরে ভারত কোনও প্রমাণ ছাড়াই একতরফা ভাবে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত-সহ একাধিক পদক্ষেপ করেছে। তাই জবাবি পদক্ষেপ করতে হয়েছে পাকিস্তানকে। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের সঙ্গে রুবিয়োর আলোচনা প্রসঙ্গে ব্রুস বলেছেন, ‘‘আমরা দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি, সংযম বজায় রাখার বার্তা দিয়েছি।’’