মায়ানমারে বিপুল ভোটে জয়ের পথে সু চি-র দল

আর মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা। ঐতিহাসিক মুহূর্তটার জন্য অধীর আগ্রহে এখন অপেক্ষা করছে গোটা দেশ। দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে সেনা শাসন দেখেছে মায়ানমার। কাল সেখানে সাধারণ নির্বাচন ছিল। কাল রাত থেকেই শুরু হয়েছে গণনা। আর আজ সকাল থেকেই ছবিটা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৫
Share:

আর মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা। ঐতিহাসিক মুহূর্তটার জন্য অধীর আগ্রহে এখন অপেক্ষা করছে গোটা দেশ।

Advertisement

দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে সেনা শাসন দেখেছে মায়ানমার। কাল সেখানে সাধারণ নির্বাচন ছিল। কাল রাত থেকেই শুরু হয়েছে গণনা। আর আজ সকাল থেকেই ছবিটা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে ৫৭টি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে আজ। আর তার মধ্যে ৫৬টিই দখল করেছে বিরোধী নেত্রী আউং সান সু চি-র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। ফল প্রকাশের এই ধারা দেখেই মায়ানমারের নেত্রীকে আজ টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘মায়ানমারের ভোটে নজরকাড়া সাফল্যের জন্য আউং সান সু চি-কে আন্তরিক অভিনন্দন। এটা গণতন্ত্রের জয়।’’

এতগুলো বছর ধরে মায়ানমারের কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে রাখার পরে অবশেষে দেশে সাধারণ নির্বাচনে রাজি হয়েছিল সেনা। আর সেই সুযোগ কাল পুরোপুরি উসুল করে নিয়েছিলেন দেশের মানুষ। সকাল থেকেই বুথে বুথে ছিল ভোটারদের লম্বা লাইন। ভোট পড়েছিল প্রায় আশি শতাংশ। তবে দেশের মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে সওয়াল করে কাল যতই রাস্তায় নামুন না কেন, তাঁরা ভিতরে ভিতরে শঙ্কিতও। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘ভোটের ফল প্রকাশের পরে সেনার অত্যাচার বাড়বে না তো?’’ ২০১১ থেকে দেশ শাসন করছে ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)। এত দিন ধরে তাদের পিছনে ছিল সেনারই সমর্থন। ইউএসডিপি-র তরফে কালই জানানো হয়েছিল, এই ভোটে মানুষের রায় তাঁরা মাথা পেতে নেবেন। আজকের রায় বেরোনোর পরে দেখা গিয়েছে, দলের বেশির ভাগ হেভিওয়েট প্রার্থী, এমনকী দলের চেয়ারম্যানও তাঁর কেন্দ্রে হেরে গিয়েছেন।

Advertisement

এনএলডি-কে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে গেলে ৬৭ শতাংশ আসন পেতেই হবে। আজ দলের মুখপাত্র উইন তিয়েন জানিয়েছেন, ফলের যা ধারা তাতে তাঁরা ৭০ শতাংশ আসন পাবেন বলে আশাবাদী। আজই জয়ের গন্ধ পেয়ে ইয়াঙ্গনের রাস্তায় নেমে পড়েছেন এনএলডি-র প্রচুর সমর্থক। গায়ে দলের পতাকা জড়িয়ে ২৪ বছরের ওয়ান্না হাতায়কে দলের সদর দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল। তাঁকে ঘিরে শ’খানেক মানুষের ভিড়। ওয়ান্না বললেন, ‘‘আজ রাতেই আমরা জিতব। যত ক্ষণ না পর্যন্ত ফল জানতে পারছি, আমরা এখানেই থাকব।’’ এনএলডি-র তরফে জানানো হয়েছে, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ৪৫টির মধ্যে ৪৪টি এবং উচ্চকক্ষের ১২টি আসনই এখন তাদের দখলে।

তবে এনএলডি যতই ক্ষমতায় আসুক না কেন, নোবেলজয়ী সু চি অবশ্য দেশের প্রেসি়ডেন্ট পদে বসতে পারবেন না। সেনা ইতিমধ্যেই সংবিধান সংশোধন করে পঁচিশ শতাংশ আসন নিজেদের দখলে রেখেছে। আজকের রায় শোনার পরেও অবশ্য সংযত প্রতিক্রিয়াই দিয়েছেন সু চি। ইয়াঙ্গনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘দলের প্রার্থীদের এখনই অভিনন্দন জানানোর সময় আসেনি।’’ তবে জয়ের বিষয়ে তিনিও যে প্রত্যয়ী তার ইঙ্গিত দিয়েই তাঁর সংযোজন, ‘‘ভোটের রায় নিয়ে মানুষের একটা ধারণা আছে। আমাকে আর বলতে হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন