ব্রিটেনের এক মৎস্যজীবী মাছ ধরতে গিয়েছিলেন সমুদ্রে। হঠাৎই তিনি খুঁজে পেলেন একটা নোঙর। অন্য সময় হলে হয়ত সেটিকে আবার সমুদ্রেই ফেলে দিতেন। কিন্তু দেখে সন্দেহ হওয়ায় সঙ্গে করে নিয়ে এলেন। আর এই নোঙর থেকেই জানা গেল চমকপ্রদ সব তথ্য।
১৭০০ শতকের নোঙর এটি, জানালেন গবেষকরা। এটি যে জাহাজের, সেটিতে মহামূল্যবান যে সামগ্রী ছিল, যার মোট অর্থ প্রায় ১০০ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৯,১৭২ কোটি টাকা।
কুঠারের মতো দেখতে নোঙরটি ব্রিটেনের কর্নওয়াল থেকে ২০ মাইল দক্ষিণে একটি মাছ ধরার নৌকার জালে আটকা পড়েছিল। এই নোঙরটি ছিল মার্চেন্ট রয়্যালের।
১৬৪১ সালে জাহাজটি ডুবে যায় সমুদ্রে। অতলান্তিক সাগরে ডুবে যাওয়া জাহাজে কত সোনা ছিল জানেন?
প্রায় ৪৬ হাজার কিলোগ্রাম সোনা ছিল ওই বাণিজ্যতরীতে, আর ছিল ৪০০টি মেক্সিকান রুপোর বাঁট।
এত সোনা থাকায় একে বলা হত ‘সমুদ্রের এল ডোরাডো বা সোনার শহর’। জাহাজটি মেক্সিকো থেকে ব্রিটেনে ফেরার পথে সিলি দ্বীপের কাছে ঝড়বৃষ্টির সময় ডুবে গিয়েছিল।
কিন্তু এটা যে সেই জাহাজেরই নোঙর সেটা কী ভাবে জানা গেল? আকৃতি ও মাপ দেখেই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন এটির বিষয়ে।
এই বিশাল পরিমাণ সোনা ও রুপো খুঁজতে গিয়ে অসংখ্য ডুবুরী হয়রান হয়েছেন। মারাও গিয়েছেন কেউ কেউ। নোঙর মেলায় সেই জাহাজডুবির জায়গাটিকে চিহ্নিত করা গেল বলেই মনে করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
এর আগে কর্নিশ উপকূলে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মিললেও গুপ্তধনের সন্ধান মেলেনি, তাই এই নোঙর ফের উস্কে দিল এ বার কি সোনার শহরের সন্ধান মিলবে সমুদ্রের তলায়?
গুপ্তধনের সন্ধান পেলেই ব্রিটিশ সরকারকে জানানোই নিয়ম, সংবাদ সংস্থাকে এমনটাই জানান স্থানীয় এক বাসিন্দা। কিন্তু ডুবুরি হওয়ার জন্যও লাইসেন্স জরুরি।
নোঙরটিকে সংরক্ষণের কাজ করছেন মিলবার্ন নামে এক ব্যক্তি। নোঙর নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি শুরু হয়েছে শখের ডুবুরিদের ‘সোনার শহর’ খোঁজার কাজও।