ইরাকে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ, ধূলিসাৎ সাদ্দামের কবর

এলাকা দখলের লড়াইয়ে এ বার ক্ষতবিক্ষত হল সাদ্দাম হুসেনের কবর। গত কাল রাতে সাদ্দামের জন্মস্থান ইরাকের তিকরিতের উত্তর ও দক্ষিণে জাতীয় সেনার সঙ্গে দীর্ঘ সংঘর্ষ হয় পশ্চিম এশিয়ার বৃহত্তম জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের। তিকরিতকে জঙ্গিদখল মুক্ত করতে কয়েক সপ্তাহ ধরেই তৎপর সেনা। বিশাল সেনাবাহিনী তিকরিতে পৌঁছেছে দিন কয়েক আগেই। কাল রাতে জঙ্গিদের পিছু হটাতে সেনা আক্রমণ চালালে তার প্রত্যুত্তর দেয় জঙ্গিরা। সেই লড়াইয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তিকরিত। লন্ডভন্ড হয়েছে সাদ্দামের কবর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মসুল শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:২০
Share:

এলাকা দখলের লড়াইয়ে এ বার ক্ষতবিক্ষত হল সাদ্দাম হুসেনের কবর।

Advertisement

গত কাল রাতে সাদ্দামের জন্মস্থান ইরাকের তিকরিতের উত্তর ও দক্ষিণে জাতীয় সেনার সঙ্গে দীর্ঘ সংঘর্ষ হয় পশ্চিম এশিয়ার বৃহত্তম জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের। তিকরিতকে জঙ্গিদখল মুক্ত করতে কয়েক সপ্তাহ ধরেই তৎপর সেনা। বিশাল সেনাবাহিনী তিকরিতে পৌঁছেছে দিন কয়েক আগেই। কাল রাতে জঙ্গিদের পিছু হটাতে সেনা আক্রমণ চালালে তার প্রত্যুত্তর দেয় জঙ্গিরা। সেই লড়াইয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তিকরিত। লন্ডভন্ড হয়েছে সাদ্দামের কবর।

এই লড়াইয়ের কয়েকটি ভিডিও ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। কে বা কারা ওই ভিডিও টেপ তৈরি করেছে তা জানা না গেলেও, ওই ফুটেজে জানানো হয়েছে, তিকরিতের অউজা গ্রাম থেকে ভিডিওটি শু্যট করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, সেনা-জঙ্গি লড়াইয়ে সাদ্দামের এক সময়ের জমকালো কবর প্রায় ধুলোয় মিশে গিয়েছে। বিশাল ওই গোরস্থানের উঁচু স্তম্ভগুলি ভেঙে পড়েছে, উধাও হয়েছে সাদ্দামের মূল কবরের উপরে রাখা তাঁর প্রকাণ্ড ছবিগুলিও। এক কথায়, কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে কবর।

Advertisement

গণহত্যা, মানবতাবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগে ২০০৩ সালে মার্কিন সেনার হাতে বন্দি হন সাদ্দাম। ২০০৬ সালে ইরাকের স্পেশ্যাল ট্রাইব্যুনাল দোষী সাব্যস্ত করলে তাঁর ফাঁসি হয়। ২০০৭ সালে তিকরিতের অউজায় কবর দেওয়া হয় সাদ্দামকে। তবে ২০১৪ সালের শুরুর দিকে খবর পাওয়া যায়, তিকরিতের কবর থেকে রাতের অন্ধকারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সাদ্দামের দেহাবশেষ। সাদ্দামের দেহ এখন কোথায় তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। মনে করা হয়, দেশে সাদ্দামের বিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান এবং ক্রমশ সংঘর্ষের বাতাবরণ তৈরি হওয়ায় আগাম সতর্কতা হিসেবে নিরাপদ জায়গায় সাদ্দামের দেহ সরিয়ে নিয়ে যান তাঁর অনুগামীরা। এই কবরে যে হামলা হতে পারে, তা আঁচ করে পেরেছিলেন তারা।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আইএসকে পিছু হটাতে আমেরিকার নেতৃত্বে ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন দেশের যৌথ বাহিনীর হামলায় মসুলে কিছুটা হলেও কোণঠাসা হয়েছে আইএস। নিহত হয়েছে কয়েক হাজার জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য। ধর্মীয় সাম্রাজ্যবাদের প্রচার ও প্রণয়নে ইরাকের মসুলকেই জঙ্গিদের রাজধানী বলে ঘোষণা করেছিল আইএস। ইরাকে তাদের সব চেয়ে শক্ত ঘাঁটি ছিল মসুলই। কিন্তু লাগাতার বিমান হামলায় পিছপা হয়ে বর্তমানে তিকরিতকে তারা নিজেদের দ্বিতীয় শক্ত ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে। পণবন্দিদের মুণ্ডচ্ছেদ, তাদের জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে আপলোড করে নাশকতা ছড়ানোর পাশাপাশি ইরাকের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শতাব্দীপ্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের উপর লাগাতার আক্রমণ চালাচ্ছে আইএস। মসুলের গ্রন্থাগার, জাদুঘর থেকে শুরু করে অ্যাসিরিয় সভ্যতার শহর নিমরুদ সর্বত্র ইতিহাসকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন