রাষ্ট্রপুঞ্জে পাক-কৌশল ভেস্তে দিতে প্রস্তুত ভারত

সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মানবাধিকার কমিশনের ৪৭টি সদস্য-রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১২
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক মাসব্যাপী শীর্ষ সম্মেলন আগামিকাল থেকে জেনিভায় শুরু হচ্ছে। নিউ ইয়র্কে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন। এই দুই আন্তর্জাতিক মঞ্চেই কাশ্মীর নিয়ে ইসলামাবাদের সম্ভাব্য আক্রমণকে ভোঁতা করতে ঘুঁটি সাজাচ্ছে নয়াদিল্লি।

Advertisement

সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মানবাধিকার কমিশনের ৪৭টি সদস্য-রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এক মাস ধরে তাঁদের সঙ্গে হয় তিনি দেখা করেছেন, না হলে ফোনে কথা বলেছেন। জয়শঙ্কর তাঁদের বুঝিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর এখনও পর্যন্ত প্রাণহানি বা হিংসার ঘটনা ঘটেনি। জানা গিয়েছে, জেনিভায় পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশি প্রতিনিধিত্ব করলেও ভারতের তরফে নেতৃত্ব দেবেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) বিজয় ঠাকুর সিংহ। সঙ্গে থাকবেন পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া। আগামী পরশু পাক বিদেশমন্ত্রী কাউন্সিলে বক্তৃতা করবেন। সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর গুরুত্বকে লঘু করতে জেনিভায় জয়শঙ্করকে না পাঠিয়ে বিসারিয়াকে দিয়েই পাল্টা জবাব দেওয়ার কৌশল নিয়েছে ভারত। সূত্রটির বক্তব্য, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনেও কাশ্মীর-প্রসঙ্গ তুলবে পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁর বক্তৃতায় কাশ্মীর-প্রসঙ্গে উন্নত দেশগুলিকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা চালাবেন।

সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তান দু’টি পদক্ষেপ করতে পারে। হয় তারা চিঠি দিয়ে মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের কাছে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা চাইবে। সে ক্ষেত্রে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন, ওই আলোচনা হবে কি না। দ্বিতীয়ত, কাশ্মীরের মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ তুলে ইসলামাবাদ একটি বিশেষ প্রস্তাব পাশ করাতে চাইবে। সে ক্ষেত্রেও ভোটাভুটির মাধ্যমে স্থির হবে, ওই প্রস্তাব পাশ হবে কি না। নয়াদিল্লি ভোটাভুটিতেই বাজিমাত করতে চাইছে।

Advertisement

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত বিদেশ সফর করছেন জয়শঙ্কর। ইন্দোনেশিয়া, মলদ্বীপ-সহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। পাশে না পেলেও বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বেজিংকেও। বিষয়টি নিয়ে ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলি-সহ দক্ষিণ আফ্রিকা, ফিজি, অস্ট্রেলিয়া এবং ফিলিপিন্সের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন জয়শঙ্কর। ভারতে নিযুক্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে বলা হয়েছে যে পাকিস্তান বিষয়টিকে কী ভাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

সিঙ্গাপুরের একটি অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মঞ্চকে বার্তা দিতে চেয়ে গত শুক্রবার বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘অধিকাংশ রাষ্ট্রই মনে করে ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়টি একান্তই ভারতের বিষয়। সকলে জানে, পাকিস্তান এই নিয়ে খুব কড়া ভাষায় কথা বলতে চলেছে। কিন্তু সাধারণ ভাবে আন্তর্জাতিক শিবিরের বক্তব্য, যদি কোনও সমস্যা থেকেই থাকে, তা ভারত এবং পাকিস্তান নিজেরা বসে সমাধান করে নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন