ঘনিষ্ঠ: আর্জেন্টো-বেনেটের সেই ‘টপলেস’ নিজস্বী।
প্রথম যখন অভিযোগ উঠল, তখন বলেছিলেন, সব মিথ্যে কথা। এ বার তাঁদের ঘনিষ্ঠ ছবি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভেসে ওঠায় ইটালীয় অভিনেত্রী আসিয়া আর্জেন্টো দাবি করছেন, ‘‘কামাতুর ছেলেটি আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।’’
হলিউডের প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টাইনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম আর্জেন্টো। #মিটু আন্দোলনেও প্রথম সারিতে ছিলেন তিনি। এ হেন অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে তাঁর থেকে কুড়ি বছরের ছোট এক অভিনেতা যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনায় স্বভাবতই হলিউডে সাড়া পড়ে গিয়েছে। ওয়াইনস্টাইনের আইনজীবী বলেছেন, ‘‘যাঁর নিজেরই চরিত্রের ঠিক নেই, তিনি আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ আনেন কী করে!’’
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৩ সালে। অভিনেতা জিমি বেনেটের দাবি, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হোটেলে আর্জেন্টো তাঁকে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেছিলেন। তখন জিমির বয়স ১৭, আর্জেন্টোর ৩৭। অবশ্য এর ন’বছর আগে, ২০০৪ সালে, ‘দ্য হার্ট ইজ় ডিসিটফুল অ্যাবভ অল থিংস’ নামের একটি ছবিতে আর্জেন্টোর ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছিল শিশুশিল্পী জিমি। তখনই তাঁদের পরিচয় হয়। ‘মা-ছেলে’ হিসেবে বিভিন্ন ফটোশ্যুটও তখন করেছিলেন তাঁরা। বহু বছর পরে ক্যালিফোর্নিয়ায় তাদের আবার দেখা হয়। তখনই আর্জেন্টো তাঁকে যৌনহেনস্থা করেছিলেন বলে একটি মার্কিন সংবাদপত্রে দাবি করেছেন বেনেট।
আরও পড়ুন: প্যারিসে ‘জঙ্গি’ হানা, নিহত ২
পাঁচ বছর কেন তিনি চুপ করে ছিলেন এই প্রশ্নের উত্তরে ২২ বছর বয়সি জিমি জানান, #মিটু আন্দোলনে নিজেকে ‘নিগৃহীতা’ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন আর্জেন্টো। যা দেখে জিমির মনে হয়েছিল, আর্জেন্টো যে নিজেও হেনস্থাকারী, সেটা তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া দরকার। আর্জেন্টোর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁর মুখ বন্ধ করতে অভিনেত্রী তাঁকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার ডলার (আড়াই কোটি টাকা) দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন বেনেট।
জিমির দাবি প্রথমে উড়িয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টো। বলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কোনও যৌন সম্পর্কই ছিল না। তবে জিমিকে টাকা দেওয়ার কথা মেনে নিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘জিমি আর্থিক ভাবে খুবই চাপে ছিল। তাই তাকে আমি আর অ্যান্টনি (আর্জেন্টোর প্রাক্তন প্রেমিক, সেলিব্রিটি শেফ অ্যান্টনি বুরডেন) সাহায্য করেছিলাম।’’
আজ একটি মার্কিন সংবাদপত্রে বেনেট-আর্জেন্টোর একটি ‘টপলেস’ সেলফি প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে ফাঁস হয়ে গিয়েছে বেনেটকে নিয়ে আর্জেন্টো ও তাঁর এক বন্ধুর মেসেজ বিনিময়। আর্জেন্টো তাঁর বন্ধুকে লিখেছেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে আমায় নিজের নগ্ন ছবি পাঠাত বেনেট। ২০০৪-এ যখন ক্যালিফোর্নিয়ায় আমাদের ফের দেখা হয়, ও আমায় বলে, সেই ছোট্টবেলা থেকে আমার প্রতি নাকি গভীর ভাবে আকৃষ্ট। তার পরেই আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।’’ এখানেই না থেমে আর্জেন্টোর আরও দাবি, ‘‘আমাকে ও ধর্ষণ করেছিল, ঠিক তা বলব না। তবে আমি সত্যিই হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।’’
ঘটনার সময়ে বেনেটের বয়স ছিল সতেরো বছর দু’মাস। ক্যালিফোর্নিয়ায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনের বৈধ বয়স ১৮। ফলে বেনেটের সঙ্গে এই সম্পর্ক যে বেআইনি, তা কিছুতেই অস্বীকার করতে পারবেন না আর্জেন্টো। তবে বন্ধুকে লেখা মেসেজে আর্জেন্টো দাবি করেছেন, ঘটনার সময়ে বেনেট যে প্রাপ্তবয়স্ক ছিল না, এ বিষয়ে তাঁর কোনও ধারণাই ছিল না। বেনেটের আইনজীবী যখন টাকা দাবি করেন, তখনই আর্জেন্টো বিষয়টি জানতে পারেন।