বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে বুধবার রণক্ষেত্র হয়ে উঠল বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জেলা গোপালগঞ্জ। গুলি এবং গ্রেনেড হামলায় অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে।
প্রকাশিত খবরে দাবি, নিহতেরা হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালিপাড়ার রমজান কাজী (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১)। সুমন বিশ্বাস নামে টুঙ্গিপাড়ার আর এক বাসিন্দা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পেশায় ব্যবসায়ী দীপ্তের পরিবার ‘প্রথম আলো’কে জানিয়েছে, তিনি দুপুরের খাবার খেয়ে তাঁর দোকানে যাচ্ছিলেন। চৌরঙ্গী এলাকায় তাঁকে গুলি করা হয়। নিহত রমজানের বাবা কামরুলের অভিযোগ, সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছে।
দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সমর্থকদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধেও। এনসিপি নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, কয়েকশো সশস্ত্র আওয়ামী সমর্থক ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে গোপালগঞ্জ পুরসভা পার্কে তাঁদের সমাবেশস্থলের দিকে এগোনোর চেষ্টা করার ফলেই উত্তেজনা ছড়ায়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা মহম্মদ পিয়ালের নেতৃত্বে দলের কর্মী-সমর্থকেরা সভামঞ্চ ভাঙচুর করেন এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালান বলেও অভিযোগ। হিংসার জেরে গোপালগঞ্জে কার্ফু জারি করা হয়েছে। টহলদারি শুরু করেছে, সেনা এবং বিজিবি বাহিনী।
গত অগস্টে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ঘিরে দানাবাঁধা প্রবল জনবিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাসিনা। সেই আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনত আবদুল্লার মতো ছাত্রনেতারা পরবর্তীকালে এনসিপি গড়েছেন। এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামীর দাবি মেনে মুহম্মদ ইউনূসের সরকার ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করেছে আওয়ামী লীগকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর জেলা গোপালগঞ্জে এখনও নিয়মিত হাসিনার সমর্থনে জমায়েত, মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। হাসিনার দলের সেই ‘গড়’ ভাঙতেই এনসিপির বহিরাগত সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ।