Iran-Israel Conflict

ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, সামলে নিয়েই পরমাণু কর্মসূচি চালু হবে ফের! ইরানের ঘোষণা যুদ্ধবিরতি-বিভ্রান্তির মধ্যেই

তাদের পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করারই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল তেহরান, যা নিয়ে এই সংঘাতের সূত্রপাত। তারা এ-ও স্পষ্ট করল যে, এই কর্মসূচিতে কোনও বাধা এলে তা প্রতিহতও করবে তারা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১৬:০০
Share:

ইরানের এই তিন পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করেই হামলা হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এখন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনা চলছে। মঙ্গলবার এমনটাই জানালেন ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মহম্মদ ইসলামি। ইরান দাবি করেছিল, ইজ়রায়েল বা আমেরিকার হামলায় তাদের পরমাণু কেন্দ্রের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তেজস্ক্রিয় বিকিরণও হচ্ছে না। এ বার তারা তাদের পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করারই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল, যা নিয়ে এই সংঘাতের সূত্রপাত। তারা এ-ও স্পষ্ট করল যে, এই কর্মসূচিতে কোনও বাধা এলে তা প্রতিহতও করবে তারা। অন্য দিকে, ইরানকে সহযোগিতা করার আর্জি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

Advertisement

ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান ইসলামির বিবৃতি প্রকাশ করেছে ইরানের সংবাদ মাধ্যম মেহর নিউজ। ইসলামির কথায়, ‘‘আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি। যে এলাকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এখন সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘পরমাণু কর্মসূচি চালু করার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা হল, এই উৎপাদন বা পরিষেবায় কোনও বাধা এলে তা প্রতিহত করা।’’ মনে করা হচ্ছে, এ ভাবে ইরান যেমন মেনে নিল যে, ইজ়রায়েল বা আমেরিকার হানায় তাদের পরমাণু কেন্দ্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তেমনই এ-ও স্পষ্ট করল যে, চাপ যতই আসুক, পরমাণু কর্মসূচি তারা বন্ধ করছে না।

সোমবার রাতে পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। তার পরে আমেরিকা দাবি করেছে, দুই দেশই সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। শেষ পাওয়া খবরে ইজ়রায়েল দাবি করেছে, ইরান সংঘর্ষবিরতির শর্ত মানেনি বলে তারা হামলা চালাচ্ছে সে দেশে। ইরান পাল্টা এই অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছে, শত্রু আগ্রাসন দেখালে তারাও জবাব দেবে। এই আবহে ইরান তাদের দেশে পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করার বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়ে রাখল।

Advertisement

১৩ জুন ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে প্রথম হামলা চালায় ইজ়রায়েল। এর পরে গত রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময়) আবার ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্র ফোরডো, ইসফাহান, নাতান্‌জ় লক্ষ্য করে হামলা চালায় আমেরিকা। তার পরে ইরান জানায়, তাদের পরমাণু কেন্দ্রে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। নাগরিকদের উদ্বিগ্ন হতেও বারণ করে সরকার। এ বার তারা পরমাণু কর্মসূচিতে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কথা মেনে নিলেও স্পষ্ট করল যে, তা চলবে। ইজ়রায়েলের দাবি, শীঘ্রই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে ফেলবে ইরান। সেই অস্ত্র তাদের হাতে নিরাপদ নয়। ইরান দাবি করেছে, তারা জনগণের স্বার্থেই পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে। বোমা তৈরি করছে না। তাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতেই ১৩ জুন হামলা শুরু করে ইজ়রায়েল। পাল্টা সে দেশে হামলা করে ইরানও।

এই আবহে রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত পরমাণু সংস্থা আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রসি ইজ়রায়েল এবং ইরানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে কথা বলারও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এ-ও জানিয়েছেন, আইএইএর সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি। তাঁর আশা, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যে ‘বিতর্ক’ রয়েছে, তার সমঝোতা কূটনৈতিক পথেই সম্ভব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement