(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কের শৈত্য ক্রমশ কাটতে শুরু করেছে। এ বার নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও উন্নত করতে উদ্যোগী হল বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান। প্রায় ২০ বছর পরে ফের বৈঠকে বসল বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি)। এর আগে ঢাকা এবং ইসলামাবাদের জেইসি স্তরের শেষ বৈঠক হয়েছিল ২০০৫ সালে।
২০০৫ সালের ওই বৈঠকের সময় বাংলাদেশের শাসনভার ছিল বিএনপির হাতে। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। পরে ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসেন হাসিনা। তখন থেকেই ঢাকা এবং ইসলামাবাদের সম্পর্কে শীতলতা তৈরি হয়। হাসিনা জমানার দীর্ঘ দেড় দশকে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল। গত বছর ছাত্রজনতার বিক্ষোভের জেরে ক্ষমতাচ্যুত হন হাসিনা। বাংলাদেশের শাসনভার যায় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে। বস্তুত, তখন থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের শীতলতা কাটতে শুরু করে। সরাসরি বাণিজ্যও শুরু হয় দু’দেশের।
গত এক বছরে ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে মন্ত্রী এবং সেনাকর্তাদের আনাগোনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার ঢাকায় দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক আয়োজিত হল। ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এই বৈঠকের জন্য পাকিস্তান থেকে এসেছেন শাহবাজ় শরিফের সরকারের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলি পারভেজ মালিক। বাংলাদেশের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তরফে জানানো হয়, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, জ্বালানি, গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা, ব্যাঙ্কিং, পর্যটন, খেলাধুলা এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দু’দেশের প্রতিনিধিদের। বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়েও দু’পক্ষের মধ্যে সদর্থক আলোচনা হয়েছে বলে দাবি ঢাকার।
সোমবারের বৈঠক শেষে পাকিস্তানি মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ থেকে পাট এবং অন্য কৃষিপণ্যের আমদানি বৃদ্ধি করতে চায় পাকিস্তান। ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে যে ১০০ কোটি ডলারেরও কম বাণিজ্য হয়, তা-ও উল্লেখ করেন তিনি। এই বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে বলে ঢাকায় জানান পারভেজ।