গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে বুধবার জমা পড়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী রিপোর্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে রিপোর্টটি জমা দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী ওই রিপোর্টটি হাতে পাওয়ার পরে ইউনূস বলেন, “কী ভয়াবহ এক একটি ঘটনা! আমাদের সমাজের ‘ভদ্রলোকেরা’, আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনেরা এ ঘটনাগুলি ঘটিয়েছেন।”
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে গুমের অভিযোগ উঠেছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশে অপরাধে অভিযুক্ত অনেককে গ্রেফতার না-করে গুম করে দেওয়া হত বলে অভিযোগ। উঠে এসেছে হাসিনা জমানার গোপন বন্দিশালা বা ‘আয়নাঘর’-এ বন্দি করে নির্যাতনের অভিযোগও। পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এই বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন ইউনূস। তিনি নিজেও ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের পরে ইউনূস বলেছিলেন, “একজন বলছিলেন খুপরির মধ্যে রাখা হয়েছে। এর থেকে তো মুরগির খাঁচাও বড় হয়।”
বুধবার গুম তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় রিপোর্টটি পাওয়ার পরে ইউনূস জানান, সেটি ওয়েবসাইট এবং বই আকারে প্রকাশ করতে হবে। তদন্ত কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা যা কিছু পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজ়িয়াম হওয়া উচিত। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা।” বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জানান, এ ধরনের বন্দিশালা কেমন হয়, তিন বর্গফুটের খুপরির মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আটকে থাকার যে নির্মমতা, সেই চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, তদন্ত কমিশনের সদস্যেরা জানান, এখনও পর্যন্ত তাঁদের কাছে ১,৮৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ১,৩৫০টি অভিযোগ তাঁরা যাচাই করেছেন। এই অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও মনে করছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্যেরা।