(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস। — ফাইল চিত্র।
শেখ হাসিনাকে ফেরত না পেলেও এই একটিমাত্র বিষয়কে ঘিরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আটকে রাখতে চায় না বাংলাদেশ। রবিবার তা স্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সে দেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের বক্তব্য, ভারতের সঙ্গে বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। হাসিনা প্রসঙ্গের পাশাপাশি ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তা জলবণ্টন এবং সীমান্ত সংক্রান্ত অন্য কূটনৈতিক বিষয়গুলিও যে রয়েছে, তা-ও স্মরণ করিয়ে দেন তৌহিদ।
রবিবার ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার সময়ে হাসিনা এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় তৌহিদকে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেওয়া হয়— আমার মনে হয়, শুধুই একটি বিষয়ে আমাদের সম্পর্ক আটকে থাকবে না। কারণ, বহুমাত্রিক সম্পর্ক তো সমস্ত পৃথিবীর দেশের সঙ্গেই আছে। ভারতের সঙ্গেও আছে। আমাদের তিস্তার পানি বলুন, বা বর্ডার কিলিং বন্ধ করা বলুন— এগুলিও তো শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া, না-দেওয়ার পাশাপাশি থাকবে। একটি তো আর একটির উপর নির্ভরশীল নয়। আমাদের ওই স্বার্থগুলি থেকেই যাবে। কাজেই আমাদের স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কত দিন লাগবে আমরা জানি না।”
তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে হাসিনাকে ফেরত চায়, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। বহুমাত্রিক কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা বলার পাশাপাশি এটিও বুঝিয়ে দেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টার কথায়, “আমরা অবশ্যই চাই, যেহেতু তিনি (হাসিনা) দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাঁকে ফেরত দেওয়া হোক। যাতে বিচার এবং শাস্তি কার্যকর করা যায়। কিন্তু এটার কারণে বাকি সব আটকে থাকবে, এটা আমি মনে করি না।” হাসিনা-জমানার ১৫ বছরের প্রসঙ্গ টেনে তৌহিদের দাবি, ওই সময়ে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তার জল এবং ‘বর্ডার কিলিং’ সংক্রান্ত সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। তাঁর কথায়, “বাহ্যিক উষ্ণতা মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হল, আমাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কি না। স্বার্থ রক্ষা স্পষ্টতই হচ্ছিল না।”
গত বছরের জুলাই-অগস্টে বাংলাদেশে ছাত্রজনতার বিক্ষোভের পরে ক্ষমতাচ্যুত হন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তার পর থেকে তিনি ভারতেই সাময়িক আশ্রয়ে রয়েছেন। ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময়ে সে দেশে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয় হাসিনার বিরুদ্ধে। ওই মামলাতেই সম্প্রতি তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল। হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে সে দেশের ট্রাইবুনাল। তার পরে ফের হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দিল্লিতে চিঠি পাঠিয়েছে ঢাকা।