বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি-র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও অত্যন্ত সঙ্কটজনক। রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউ-তে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) তিনি চিকিৎসাধীন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার খালেদা কথা বলেছেন। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে সঙ্কট এখনও কাটেনি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কিডনির সমস্যা ঠিক না-হলে খালেদার শারীরিক অবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা কম।
৮০ বছর বয়সি বিএনপি নেত্রীকে দেখতে রবিবার সকাল থেকে ঢাকার হাসপাতালের বাইরে ভিড় হচ্ছে। দলের কর্মী-সমর্থকেরা আসছেন নেত্রীর খোঁজ নিতে। হাসপাতালে ঢুকতে না-পেরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। নেত্রীর সুস্থতা কামনা করছেন। দলের কোনও কোনও নেতা হাসপাতালে ঢুকলেও খালেদার কাছাকাছি যেতে পারেননি। যেহেতু তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে এবং নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে, তাই চিকিৎসকেরা বাড়তি সতর্ক। তাঁরা ছাড়া বর্ষীয়ান নেত্রীর কাছে আর কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
খালেদার কিডনির সমস্যা অনেক পুরনো। গত রবিবার শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরীক্ষার পর ফুসফুসে সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। সূত্রের খবর, বয়সজনিত কারণে পরিস্থিতি অনেক জটিল হয়ে উঠেছে। কারণ, তাঁর শরীরে আগে থেকেই একাধিক সমস্যা রয়েছে। একটির চিকিৎসা করতে গেলে অন্য রোগের উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কিডনির কার্যকারিতা অনেকটা কমে গিয়েছে খালেদার। ফলে টানা চার দিন তাঁর ডায়ালিসিস করাতে হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত খালেদা কোনও কথাই বলেননি। শনিবার অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়।
২০০৮ সাল থেকে খালেদার জ্যেষ্ঠপুত্র তথা বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে রয়েছেন। শনিবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি জানান, মাকে দেখার ইচ্ছা থাকলেও এই মুহূর্তে তিনি বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না। তাঁর কিছু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় খোলসাও করেননি তারেক। জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুকূল হলেই তিনি দেশে ফিরবেন। তারেকের এই বক্তব্যের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, তাদের তরফে তারেকের দেশে প্রত্যাবর্তনে কোনও বাধা নেই। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস খালেদার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন এবং তাঁর সুস্থতা কামনা করেছেন। এমনকি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফও সুস্থতা কামনা করে চিঠি দিয়েছেন। সূত্রের খবর, খালেদা কিছুটা সুস্থ হলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। তার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।