(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু আগ বাড়িয়ে গোপালগঞ্জে বুধবারের হিংসার জন্য সরাসরি ভারতকে নিশানা করল বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব শুক্রবার অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার পাশাপাশি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্ট করতে ভারত নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে! তিনি বলেন, ‘‘ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় পরশু দিন গণ-অভ্যুত্থানের নেতাদের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে যে সশস্ত্র হামলা হয়েছে, আমরা মনে করি সেই হামলার নেপথ্যেও দিল্লির ষড়যন্ত্র আছে।’’
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জেলা গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ এবং পদযাত্রা ঘিরে বুধবার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। হামলা, ভাঙচুর থেকে শুরু করে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। গুলিও চলে বেশ কয়েক রাউন্ড। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত হামলাকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০। কিন্তু হাসিনা তাঁর অডিয়োবার্তায় অন্তত সাত জনের মৃত্যুর কথা বলেছেন।
গোপালগঞ্জের ঘটনায় ইতিমধ্যে ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। হামলাকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদেরও অনেকে আহত হয়েছেন। এনসিপি-র অভিযোগ, হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্যেরা এই অশান্তি করেছেন। তাঁদের পদযাত্রায় হামলা চালানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কার্ফু জারি করে প্রশাসন।
দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সমর্থকদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধেও। এনসিপি নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, কয়েকশো সশস্ত্র আওয়ামী সমর্থক ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে গোপালগঞ্জ পুরসভা পার্কে তাঁদের সমাবেশস্থলের দিকে এগোনোর চেষ্টা করার ফলেই উত্তেজনা ছড়ায়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা মহম্মদ পিয়ালের নেতৃত্বে দলের কর্মী-সমর্থকেরা সভামঞ্চ ভাঙচুর করেন এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালান বলেও অভিযোগ।