বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: পিটিআই।
প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই সমাধিস্থ করা হবে প্রয়াত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে। খালেদার দলের তরফে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর ২টোয় (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুসারে) শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবন মাঠ এবং মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় জিয়া উদ্যানে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউরের পাশেই সমাধিস্থ করা হবে খালেদাকে।
জিয়ার মরদেহ যে গাড়িতে থাকবে, সেটির নিরাপত্তায় ১০ হাজার পুলিশ (বাংলাদেশের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য-সহ) মোতায়েন করার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন সেনাবাহিনীর সদস্যেরাও। খালেদার শেষকৃত্য পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় হবে বলে জানিয়েছে ইউনূস সরকার। ইউনূসের প্রেস সচিব বলেন, “খালেদা জিয়ার জানাজায় (শেষকৃত্য) প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা ও কূটনীতিকেরা উপস্থিত থাকবেন। কিছুদিন আগে সংসদ ভবন এলাকায় বড় একটি জানাজা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জানাজা আরও বড় আকারে হবে। সেই ভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” খালেদার জানাজায় অংশ নেবেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার।
খালেদার শেষকৃত্যে বহু মানুষের ভিড় হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই মতো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে প্রশাসন। মঙ্গলবার বিএনপি-র তরফে দলের নেতা-কর্মীদের খালেদার শেষশয্যা এবং শেষকৃত্যের সময় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আর্জি জানানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ শেষযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন। তবে খালেদাকে সমাধিস্থ করার সময় ভিতরে সাধারণ মানুষকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
খালেদার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করার কথা ঘোষণা করেছে ইউনূস সরকার। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে। বুধবার বন্ধ থাকবে বাংলাদেশের সমস্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তবে জরুরি এবং আপৎকালীন পরিষেবা অন্য দিনের মতোই চালু থাকবে। আদালতের কাজ বন্ধ থাকবে কি না, তা বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট স্থির করবে বলে জানানো হয়েছে সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে। মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইউনূস বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক এবং আগামী কাল তাঁর নমাজে জানাজার দিনে এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছি।”
মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুসারে) ঢাকার হাসপাতালে মৃত্যু হয় খালেদার। একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পরেই বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের তরফে শোকপ্রকাশ করা হয়েছে। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা।