মন্ত্রী হয়ে মস্করার কাঁটায় ভারতের ব্রিটিশ জামাই

দৃশ্যটা চার বছর আগের। দু’হাতে ইউনিয়ন জ্যাক। অসহায় মুখে একটা তার থেকে ঝুলে রয়েছেন লন্ডন শহরের তৎকালীন মেয়র।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪০
Share:

বরিস জনসন

দৃশ্যটা চার বছর আগের। দু’হাতে ইউনিয়ন জ্যাক। অসহায় মুখে একটা তার থেকে ঝুলে রয়েছেন লন্ডন শহরের তৎকালীন মেয়র। সে বারের অলিম্পিক্সে ব্রিটেন প্রথম সোনাটা পাওয়ার পর অভিনব উচ্ছ্বাস দেখাতে গিয়ে বেজায় হেনস্থা হয়েছিলেন বরিস জনসন। এত বছর পরে ফের শিরোনামে সেই ‘জিপ ওয়্যার’ বিপর্যয়। বরিসও।

Advertisement

দিন কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী হতে চাইছিলেন। ইচ্ছাপূরণ হয়নি। তবে বরিসকে গত কাল বিদেশমন্ত্রীর পদে বসিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। তার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়। স্তম্ভিত চিন থেকে আমেরিকা। দায়িত্ব নিয়েই গত কাল মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল করেছেন টেরেসা। চার মন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন— মাইকেল গোভ, নিকি মর্গ্যান, অলিভার লেটউইন এবং জন উইটিংডেল। কানাঘুষো ছিল, নেপথ্যে কলকাঠি নেড়ে গোভই নাকি বরিসকে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করেন। কিন্তু সে সব চর্চা এখন অতীত। নতুন ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রীর নাম শুনেই বিতর্ক আর রসিকতার আগল খুলে গিয়েছে সর্বত্র।

কী রকম? মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মার্ক টোনার ক্যামেরার সামনেই হাসি চাপতে পারেননি। সেই ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। জার্মানিতে আবার হ্যাশট্যাগ দিয়ে তারে ঝোলা বরিসের ছবি পোস্ট করার হিড়িক শুরু হয়েছে। চিনা ‘টুইটার’ যাকে বলা হয়, সেই ‘ওয়েইবো’তে এক জন লিখেছেন, ‘‘ওঁকে দেখেই মনে হয় ব্রিটিশদের কেশসজ্জা নিয়ে কোনও ধারণাই নেই। হাস্যকর!’’ এমনকী মিস্টার বিনের সঙ্গেও বরিসের তুলনা টানা হচ্ছে।

Advertisement

কিন্তু কেন? অনেকেই বলছেন, বিভিন্ন সময়ে বরিসের আচরণ ও মন্তব্যই তাঁকে হাসির খোরাক করে তুলেছে। যেমন, বারাক ওবামাকে তিনি বলেছিলেন ‘অর্ধেক-কেনিয়ান’। লিখেছিলেন, ‘‘ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সম্পর্কে ওঁর বংশগত অনীহা রয়েছে।’’ হিলারি ক্লিন্টনের সঙ্গে ‘লাস্যময়ী নার্স’-এর তুলনা টেনেছিলেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে মস্করা করে লিমেরিক লিখেছিলেন। রেহাই পাননি জর্জ ডব্লিউ বুশ, টনি ব্লেয়ার, আঙ্গেলা মের্কেল-রাও। পাশাপাশি রয়েছে কখনও তারে ঝোলা, কখনও বাচ্চাদের সঙ্গে রাগবি খেলতে নেমে আছাড় খাওয়া। সব মিলিয়ে ব্রিটিশ কূটনীতিকরাও খানিক অবাক। টেরেসা অবশ্য কোনও ব্যাখ্যা দেননি।

তবে ভারতের সঙ্গে বরিসের সম্পর্ক ‘মধুর’ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন কেউ কেউ। কারণ, তাঁর শাশুড়ি পঞ্জাবি। বরিসও নিজেকে ‘ভারতের জামাই’ বলেন। এখন নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে তিনি জামাই আদর পান কি না, সেটাই দেখার!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement