চুক্তিহীন ব্রেক্সিট করতে কি ভোট এগিয়ে আনবেন বরিস

পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট করিয়ে দেওয়া যাতে না হয়, তা নিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন ব্রিটেনের বিরোধী নেতা তথা লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৮
Share:

ছবি: রয়টার্স।

চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পক্ষে পার্লামেন্টে আগামিকালের ভোটে তিনি যদি হেরে যান, তা হলে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ১৪ অক্টোবর সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেবেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার সরকারের শীর্ষস্থানীয় কিছু আধিকারিকের কাছ থেকে এই খবর জানা গিয়েছে। তবে ১০, ডাউনিং স্ত্রিটের সামনে দাঁড়িয়ে এ দিনও প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘আমি সাধারণ নির্বাচন এগিয়ে আনার পক্ষপাতী নই।’’

Advertisement

মুখে এ কথা বললেও তলে তলে তিনি যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তা ফাঁস হয়ে গিয়েছে শীর্ষ আধিকারিকদের কাছ থেকে পাওয়া এই খবরে। যে কোনও মূল্যে ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্তে তিনি যে অনড়, কালই মনে করিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট নিয়ে আজ আরও আক্রমণাত্মক হয়েছেন তিনি। কনজ়ারভেটিভ পার্টির এমপি-দের আজ তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে মুখ খুললে তার পরিণতি ভুগতে হবে। পার্লামেন্টের সদস্যপদ থেকেই বরখাস্ত করা হবে ‘বিদ্রোহীদের’।

পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট করিয়ে দেওয়া যাতে না হয়, তা নিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন ব্রিটেনের বিরোধী নেতা তথা লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন। তাঁর ডাকা গণ-অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে শনিবার উত্তাল হয় ব্রিটেন। করবিনকে সমর্থন জানিয়ে লন্ডন, বার্মিংহ্যাম, ম্যাঞ্চেস্টার, নিউকাসল, লিভারপুল-সহ ৩২টি শহরে পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ।

Advertisement

বরিসের দল কনজ়ারভেটিভ পার্টির অনেকেও চুক্তিহীন ব্রেক্সিট চান না। গরমের ছুটির পরে কাল পার্লামেন্টে আসবেন এমপিরা। বরিস জানেন, যাঁরা চুক্তিহীন ব্রেক্সিট চান না, তাঁরা বিরোধিতার পথে হাঁটতে পারেন। তাই আজই হুমকি দিয়েছেন, সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট দিলে ও চুক্তিহীন ব্রেক্সিট আটকানোর চেষ্টা করলে এমপি পদ থেকে বরখাস্ত করা হবে ‘বিদ্রোহীদের’। তখন তাঁরা পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে কনজ়ারভেটিভ পার্টির হয়ে লড়তে পারবেন না।

তবে বরিস জনসন যতই লম্ফঝম্প করুন না কেন, তিনি যে বেশ চাপে রয়েছেন, তাঁর এ ধরনের হুমকিতেই স্পষ্ট। কারণ বরিস নিজেও জানেন, আগামিকাল পার্লামেন্টে অনেকে তাঁর বিরোধিতা করবেন। বরখাস্ত করার ভয় দেখালেও আটকাতে পারবেন না বিদ্রোহীদের। এবং বাস্তবে বরখাস্ত করাও তাঁর পক্ষে বেশ কঠিন হবে।

প্রাক্তন ক্যাবিনেট মন্ত্রী তথা প্রাক্তন বিচারবিভাগীয় সচিব ডেভিড গোকের কথায়, ‘‘সরকার আসলে দলীয় বিদ্রোহীদের সরিয়ে দিতে চাইছে।’’ গোক জানিয়ে দিয়েছেন, কাজ হারানোর জন্য মানসিক ভাবে তিনি প্রস্তুত। চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধেই তিনি ভোট দেবেন। গোক বলেন, ‘‘দেশের জন্য যা ভাল, সেটাকেই আমি অগ্রাধিকার দেব।’’ বরিসের উপরে বিরক্ত দলের অনেক এমপি-ই। যেমন, প্রাক্তন ‘চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার’ ফিলিপ হ্যামন্ড, প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল ডোমিনিক গ্রিভ ও প্রাক্তন ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি রোরি স্টুয়ার্ট। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভণ্ড’ বলে আক্রমণ করেছেন হ্যামন্ড। রোরি স্টুয়ার্ট আরও এক ধাপ এগিয়ে বহিষ্কৃত হতে পারেন এমন সম্ভাব্য টোরি এমপি-দের একটি নামের তালিকা টুইট করেছেন। তলায় লিখেছেন, ‘‘এবং আশা করি আমিও!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন