বেগ কমলেও কাটেনি ব্রহ্মপুত্রে প্রলয়ের আশঙ্কা

তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপোর গতিপথ ধসে বন্ধ। জলের চাপে সেই ধস ভেঙে গেলেই বিপুল জলরাশি অরুণাচল-অসমে আছড়ে পড়তে পারে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৪৯
Share:

টানেলের জল ছাড়লে প্লাবিত হতে পারে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: সংগৃহীত।

আতঙ্কিত অরুণাচল ও অসমবাসীকে খানিক স্বস্তি দিয়ে টুটিং থেকে পাসিঘাট পর্যন্ত সিয়াং নদীর জলতল বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্বস্তি সাময়িক। কারণ তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপোর গতিপথ ধসে বন্ধ। জলের চাপে সেই ধস ভেঙে গেলেই বিপুল জলরাশি অরুণাচল-অসমে আছড়ে পড়তে পারে।

Advertisement

গত কাল চিনের তরফে ভারতকে জানানো হয়েছিল, ১৭ অক্টোবর সকালে তিব্বতের মিলিন এলাকার জিয়ালা গ্রামে পাহাড় ধসে ইয়ারলুং সাংপোর গতিপথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে প্রাকৃতিক বাঁধের ওপাশে নদীর জল আবদ্ধ হয়ে কৃত্রিম হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। গত কাল বিকেল থেকে বাড়তে থাকা জল ধসের বাঁধ উপছে প্রতি সেকেণ্ডে ১৮ হাজার কিউবিক মিটার হারে নীচের দিকে নামছে।

অরুণাচলের টুটিং এলাকায় ভারতে ঢুকে ইয়ারলুং সাংপো নদীর নাম বদলে হয়ে যায় সিয়াং। সিয়াংয়ের সঙ্গে পরে লোহিত, রঙানদী ও অন্য নদীর জল মিশে অসমের ধেমাজি পার করে ব্রহ্মপুত্র নদ হিসেবে প্রবাহিত হয়। সেকারণেই ইয়ারলুং সাংপোয় জলোচ্ছ্বাস হওয়ায় অরুণাচলের টুটিং থেকে পাসিঘাট হয়ে অসমের ধেমাজি, লখিমপুর, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়। জলোচ্ছাস প্রবল হওয়ার আশঙ্কায় সিয়াংয়ের দু’পাড়ে বসবাসকারীদের গত কালই সরিয়ে নেওয়া হয়। এনডিআরএফের ৮টি দল, সেনাবাহিনী, ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ-সহ নিরাপত্তা বাহিনী ও উদ্ধারকারী দল উজানি অসম ও অরুণাচলে মোতায়েন করা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: মহাকাশের ‘দিগন্ত’ ছুঁয়ে খেতাব বাঙালির

রাত থেকে পাসিঘাটে সিয়াংয়ের জল বাড়তে শুরু করে। দেখা দেয় ঢেউ। জল বিপদসীমার দিকে এগোয়। পূর্ব সিয়াং জেলার জেলাশাসক টামিও টাটাক জানান, আজ সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ স্বচ্ছ জলের স্রোত পাসিঘাটে পৌঁছয়। কিন্তু তার পরিমাণ যতখানি হবে ধরা হয়েছিল তার চেয়ে কম। বেলা ১০টা থেকে জলস্রোত ঘোলা হতে থাকে। জল ধেমাজি হয়ে ব্রহ্মপুত্রে পৌঁছয় সন্ধ্যায়। রাতে আবার সিয়াংয়ের জলস্তর বাড়ায় ধেমাজির জনাই এলাকায় জল ৫ মিটার বেড়েছে। ১০টি গ্রাম জলমগ্ন। ২৬০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

নদী বিশেষজ্ঞ পার্থজ্যোতি দাসের মতে, এখন শুধু ধসে তৈরি বাঁধ উপছে পড়া জল আসছে। বিপুল জলরাশির ভারে বাঁধ ভেঙে গেলে ওই পরিমাণ জল এক সঙ্গে আছড়ে পড়লে ফল মারাত্মক হতে পারে। তখন জলের গতিবেগ দাঁড়াবে সেকেন্ডে ৮০ হাজার কিউবিক মিটার। উজানি অসমে ব্রহ্মপুত্রে ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন